চতুর্থ দফার ম্যারাথন বৈঠকও সেভাবে জট কাটল না। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কেন্দ্র আশ্বাস দিল বটে, তবে তাতে খুব একটা সন্তুষ্ট হল না কৃষক সংগঠনগুলি। বরং কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য কেন্দ্রের উপর আরও চাপ দেওয়া হবে বলে জানালেন কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে ৩৫ টি কৃষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে চতুর্থ পর্যায়ের বৈঠক করেন তিনজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রের তরফে হাজির ছিলেন কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর, বাণিজ্য এবং রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এবং বাণিজ্য মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী সোমপ্রকাশ। যিনি পঞ্জাবের সাংসদ। প্রায় আট ঘণ্টার বৈঠকে কেন্দ্রের দেওয়া খাবার, জল এবং চা খেতেও অস্বীকার করেন কৃষক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। তাঁরা নিজেদের খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন।
পরে সন্ধ্যার শেষ লগ্নে ম্যারাথন বৈঠক মিটতে তোমর জানান, কয়েকটি বিষয় তুলে ধরেছেন কৃষকদের প্রতিনিধিরা। তাঁরা মূলত সেই বিষয়গুলিই নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘সরকারের কোনও ইগো নেই। খোলামেলাভাবেই কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। কৃষকদের আশঙ্কা যে নয়া আইনের কৃষি বাজার উঠে যাবে।’ বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের উদ্বেগ দূর করতে কেন্দ্র তৈরি আছে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মাণ্ডির বাইরে যদি কোনও ক্রয়-বিক্রয় হয়, তাহলে তা প্যান কার্ডের ভিত্তিতে হবে। তার ফলে ব্যবসায়ী নথিভুক্ত হবেন বলে দাবি করেছেন কৃষিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যও কৃষকদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে লোকজনদের উদ্বেগ আছে। আমি জোর দিয়ে বলছি যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য থাকবে এবং কৃষকদেরও সে বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি আমরা।’ খড় পোড়ানো সংক্রান্ত অধ্যাদেশ নিযে কৃষকদের উদ্বেগের বিষয়টিও বিবেচনা করা হবে সংবাদমাধ্যমের সামনে আশ্বাস দিয়েছেন তোমর।
যদিও কেন্দ্রের আশ্বাসে চিঁড়ে ভেজেনি। বরং কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় আছেন কৃষকরা। আজাদ কিষান সংঘ কমিটির হরজিন্দর সিং তান্ডা বলেন, ‘আলোচনা কিছুটা এগিয়েছে। মাঝামাঝি সময় মনে হয়েছিল, আজকের বৈঠকে কোনও ফল মিলবে না। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে মনে হয়েছে যে কৃষক বিক্ষোভের ফলে সরকারের উপর চাপ তৈরি হয়েছে। অনুকূল পরিবেশে আলোচনা হয়েছে।’ পাশাপাশি তিনি বলেছেন, ‘আমরা আশাবাদী। আইনগুলি ভুল। পরবর্তী বৈঠকে আমরা সরকারের উপর চাপ তৈরি করব। ওদের বলতে হবে যে ওরা আইন প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।’
কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর দুটোয় পরবর্তী বৈঠক হবে। তার আগে কৃষকদের বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তোমর। তিনি বলেন, ‘সরকার আলোচনা চালাচ্ছে এবং আলোচনার সময় যে বিষয়গুলি উঠে আসবে, সেগুলির অবশ্যই সমাধান হবে। তাই কৃষকদের কাছে বিক্ষোভ তুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। যাতে বিক্ষোভের জন্য দিল্লির মানুষ যে সমস্যার মুখে পড়ছেন, তা যেন তাঁদের পড়তে না হয়।’ যদিও এখনই সেই সম্ভাবনা কার্যত নেই।