গত কয়েকদিন ধরে প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত নেপাল। লাগাতার ভারী বর্ষণে বন্যার পাশাপাশি ভূমিধসের কবলে পড়ে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাঠমান্ডু। এখনও পর্যন্ত নেপালে বন্যা এবং ভূমিধসে মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ২০৯ জন। এছাড়াও, বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে আরও প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে হড়পা বান ও ভূমিধস, বিধ্বস্ত নেপালে ৭ শিশু-সহ মৃত কমপক্ষে ৩৮
নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, সারা দেশে বন্যা ও ভূমিধসে এখনও পর্যন্ত ২০৯ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ২৯ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র ঋষি রাম তিওয়ারি জানিয়েছেন, এখনও বহু মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনার কাজ চলছে। অসুস্থদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে কাঠমান্ডুতে। বন্যায় শহরের বড় অংশ ডুবে গিয়েছে। কাঠমান্ডু থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে ভূমিধসে একটি মূল সড়কে যোগাযোগ পুরোপুরি ব্যাহত হয়েছে। শুধু তাই নয়, ভূমিধসের ফলে বেশ কয়েকটি গাড়িও চাপা পড়েছে। তাতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এলাকায় ঘুমন্ত অবস্থায় ৩৬ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কাঠমান্ডু থেকে বাইরে যাওয়ার সমস্ত রাস্তা ভূমিধসে কার্যত বিপর্যস্ত হয়েছে। তবে উদ্ধারকারী দল অস্থায়ীভাবে পৃথ্বী হাইওয়েতে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে সক্ষম হয়েছে।
সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, যারা তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে তাদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সেইসাথে মৃতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করেছে সরকার। এদিকে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ থেকে ফিরে প্রধানমন্ত্রী খড়গা প্রসাদ অলি সংকট মোকাবেলায় জরুরি বৈঠক ডাকেন। জানা গিয়েছে, আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের কাজে গতি বেড়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ কাঠমান্ডুর বাসিন্দারা জল কমতে থাকায় প্লাবিত বাড়িঘর পুনরায় পরিষ্কার করা শুরু করেছেন।
এদিকে, নেপালের আবহাওয়া ব্যুরো জানিয়েছে, আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে । গত শনিবার কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের একটি মনিটরিং স্টেশনে প্রায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা ২০০২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। জলবায়ুর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক। এটি চরম ঘটনা। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হচ্ছে।