গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড় ট্রামির তাণ্ডবে কার্যত লন্ডভন্ড দশা ফিলিপিন্সের। এখনও পর্যন্ত এই ঝড়ের তাণ্ডবে প্রবল বর্ষণে বন্যা ও ভূমিধসে ফলে মৃত্যু বেড়ে ১৩০ জন হয়েছে। এছাড়াও বহু মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। ফলে সেক্ষেত্রে মৃত্যু সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ফিলিপিন্সের ইসাবেলা প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর ডিভিলাকানে আছড়ে পড়েছিল এই শক্তিশালী ঝড়। যার ফলে তাণ্ডব চলার পাশাপাশি প্রবল বৃষ্টি হয়। এতে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয় এবং ভূমিধস নামে বহু জায়গায়।
আরও পড়ুন: আমেরিকায় হ্যারিকেন হেলেনের তাণ্ডবে মৃত অন্তত ৬৪, বিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, মোবাইল সংযোগ
উল্লেখ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দ্বীপরাষ্ট্রে এটিই ছিল সবচেয়ে মারাত্মক এবং ধ্বংসাত্মক ঝড়ের একটি। এমনটাই জানিয়েছে দেশটির দুর্যোগ-প্রতিক্রিয়া সংস্থা জানিয়েছে। জানা গিয়েছে , পুলিশ, দমকলকর্মী এবং অন্যান্য উদ্ধারকারী দল শনিবার বাটাঙ্গাস প্রদেশের তালিসে লেকসাইড শহরে শেষ দুজনের দেহ উদ্ধার করেছে। তারা নিখোঁজ ছিলেন।শহরের একটি বাস্কেটবল খেলার মাঠে এক ডজনেরও বেশি সাদা কফিন পাশাপাশি রাখা হয়েছিল। তাদের সকলের দেহ কাদা, পাথর এবং ভেঙে পড়া গাছের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রশাসন জানাচ্ছে, ঝড়বৃষ্টির কারণে মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই মধ্য বাইকল অঞ্চলের বাসিন্দা। বেশির ভাগ মানুষের জলে ডুবে এবং ধসে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস শনিবার ম্যানিলার দক্ষিণ-পূর্বে একটি বিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেছেন, যে ঝড়ের কারণে অস্বাভাবিকভাবে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার মধ্যে এমন কিছু অঞ্চল রয়েছে যেখানে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী এদিন রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের উদ্ধার কাজ এখনও শেষ হয়নি। এখানে আমাদের উদ্ধার কাজে সমস্যা হচ্ছে। এখনও অনেক এলাকা বন্যায় ডুবে আছে। ফলে বড় ট্রাক যেতে পারছে না।’ মার্কোস জানান, তাঁর সরকার এলাকায় বড় বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের জন্য কাজ শুরু করবে।
উল্লেখ্য, এই ঝড়ের ফলে ৫০ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রভাবিত হয়েছে। বিভিন্ন প্রদেশে ৬ হাজারেরও বেশি জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেন ৫ লক্ষের বেশি মানুষ। তবে এখনও ট্রামি নিয়ে আতঙ্কের মেঘ কাটেনি। কারণ দেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ঝড়টি আগামী সপ্তাহে ইউ-টার্ন নিয়ে পুনরায় ফিরতে পারে ফিলিপিন্সে। কারণ দক্ষিণ চিন সাগরে উচ্চ-চাপ এই ঝড়কে আবার পিছনের দিকে ঠেলে দিতে পারে। মার্কোস এই রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।