বিহারের বিষ মদ কাণ্ডে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। শুক্রবার পাওয়া শেষ খবর অনুসারে, পড়শি রাজ্য়ের সীবান ও সারণ জেলার এই ঘটনায় আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার জেরে সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫। এদিন সরকারের তরফেই এই তথ্যের সত্যতা স্বীকার করা হয়েছে।
সীবানের জেলাশাসক মুকুল কুমার গুপ্তা এই প্রসঙ্গে বলেন, সীবান সদর হাসপাতাল এবং বসন্তপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সব মিলিয়ে মোট ৭৯ জনকে ভর্তি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে পটনা মেডিক্য়াল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়। কারণ, তাঁদের অবস্থা ক্রমশ সঙ্কটজনক হয়ে উঠছিল। অন্যদিকে, ৩০ জনকে ইতিমধ্য়েই হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘটনায় যাঁদের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের সম্পর্কে জেলাশাসক বলেন, 'মৃতদের মধ্য়ে ২৮ জনের দেহের ময়নাতদন্তের প্রক্রিয়া ইতিমধ্য়েই শেষ করা হয়েছে। তাঁদের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। '
আর সীবানের পুলিশ সুপার অমিতেশ কুমার জানিয়েছেন, গত চারদিনে সীবান জেলার ভগবানপুর, মাধার, খাইরা এবং কৌদিয়া গ্রামে মোট ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এবং এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সীবানের পাশের জেলা সারণে বিষ মদের বলি হতে হয়েছে আরও সাতজনকে। জেলাশাসক আমন সমীর জানিয়েছেন, বিষাক্ত মদ পান করার ফলে জেলার অন্তত ৬০ জন বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের অধিকাংশকেই চিকিৎসার জন্য প্রাথমিকভাবে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের মধ্য়ে ন'জন এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আরও ১৯ জনকে পটনা মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে।
সারণের পুলিশ সুপার কুমার আশিস এবং জেলাশাসক আমন সমীর, দু'জনই জানিয়েছেন, তাঁদের জেলায় এখনও পর্যন্ত বিষ মদ পানের ফলে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। গত চারদিনে এই মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেছে।
কুমার আশিস আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনায় যে বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করা হয়েছিল, তাদের হাতে ইতিমধ্য়েই ২৫ জন গ্রেফতার হয়েছেন। ধৃতদের মধ্য়ে ১০ জন মদ ব্যবসায়ীও রয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মদও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
এই ঘটনার জেরে গত ২৪ ঘণ্টায় সারণ জেলা পুলিশ ৩০৭টি অভিযান চালিয়েছে। সেই অভিযানে সব মিলিয়ে মদ তৈরির ১৯,০৮২ লিটার কাঁচা মাল বাজেয়াপ্ত ও নষ্ট করা হয়েছে। সেইসঙ্গে, গ্রেফতার করা হয়েছে ৬২ জনকে। এফআইআর দায়ের করা হয়েছে ৩০টি এবং ছ'টি মোটরবাইক ও একটি ই-রিকশা আটক করা হয়েছে।
এদিকে, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী বিজয় কুমার সিনহা জানিয়েছেন, এই ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছে রাজ্য সরকার।