রেমাল শক্তি হারিয়ে নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় তার প্রভাবে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতে। তার ওপর বর্ষা ঢোকার ফলে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে লাগাতার বৃষ্টির ফলে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে ভূমিধস এবং বন্যার কারণে আরও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হল ৪৫ জন।
আরও পড়ুন: রেমালের তাণ্ডবে কোথাও ধস, কোথাও দুর্ঘটনা! উত্তর পূর্বে মৃত্যু ৩২ জনের
জানা যাচ্ছে, মেঘালয়ের পূর্ব খাসি পার্বত্য জেলায় ভূমিধসের কারণে চাপা পড়ে চার জনের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সেখান থেকে ১ জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু গিয়েছে মিজোরামে। আইজলের পাথর খনি থেকে আরও একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৮-এ পৌঁছেছে। তাছাড়া নাগাল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে, লাগাতার বৃষ্টির ফলে অসমের অবস্থা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। একাধিক নদী ফুঁসছে। ব্রহ্মপুত্র, বরাক, কুশিয়ারা, কপিলি সহ সমস্ত প্রধান নদীর জলস্তর বিপদসীমার উপরে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে বন্যা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বৃষ্টির জলে প্লাবিত হয়েছে একাধিক এলাকা। এখনও পর্যন্ত অসমে বন্যায় তিন জনের প্রাণহানি হয়েছে। ৯ টি জেলায় ১.৯৮ লক্ষেরও বেশি মানুষ এরফলে প্রভাবিত হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ জনেরও বেশি মানুষ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, বুধবার বিকেলে বরাক নদীর জল শিলচর শহরে প্রবেশ শুরু করার পরে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। রাজ্য বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। যেসব এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ সেখানে সাধারণ মানুষকে বাড়িতে নিরাপদে থাকার জন্য আবেদন করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
বৃষ্টিতে অসমের রাজধানী গুয়াহাটির জীবনযাত্রাও ব্যাহত হয়েছে । শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। এরফলে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ডিব্রুগড়, গোয়ালপাড়া, ধুবড়ি, শোণিতপুর, বিশ্বনাথ, কাছাড়, করিমগঞ্জ প্রভৃতি জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস ছিল। বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কাজ করছে অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। মণিপুরের ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন এবং রাজভবন সহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে।