অসমের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের অনুপস্থিতির বিরুদ্ধে অভিযানে করতে গিয়ে বড় বিপাকে পড়ছে শিক্ষা দফতর। শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করার জন্য প্রকাশিত তালিকায় এমন অনেকের নাম রয়েছে, যারা মৃত, অবসরপ্রাপ্ত বা মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।
অসমের শিক্ষামন্ত্রী রনোজ পেগু রবিবার এই ভুলের তদন্ত করার ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ‘স্কুলে যাঁদের উপস্থিতি শূন্য, শিক্ষা দফতর তাঁদের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। তবে প্রশিক্ষণ, ছুটি, প্রেষণ বা অন্যান্য সরকারি কাজে অনুমোদিত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। এই শূন্য উপস্থিতির কারণ নির্ধারণের জন্য একটি তদন্তও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
প্রাথমিকভাবে ৪,৯০৭ জনের নাম তালিকায় ছিল, যার মধ্যে ১,১৯০ জন কলেজ শিক্ষক ছিলেন। তবে পরে কলেজ শিক্ষকরা স্কুল শিক্ষা দফতরের আওতার বাইরে থাকায় তাদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। এখন স্কুল শিক্ষকদের ৩,৭১৭ জনের শূন্য উপস্থিতি নিয়ে তদন্ত করা হবে।
আরও পড়ুন। নেই পুষ্টিকর খাবার, স্কুলের মিড ডে মিলে শিশুদের পাতে দেওয়া হল শুধু হলুদ আর ভাত
অসম রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাতুল চন্দ্র গোস্বামী এই তালিকার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের নাম প্রকাশ করা অগ্রহণযোগ্য এবং অসম্মানজনক। মৃত, অবসরপ্রাপ্ত, প্রেষণ এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকা শিক্ষকদের বেতন বন্ধ করার আদেশ দফতরের সমন্বয়ের অভাব প্রমাণ করে।’
শিক্ষকদের অনুপস্থিতির তালিকা শিক্ষা সেতু পোর্টালে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পোর্টালটি স্কুল, কর্মী এবং শিক্ষার্থীদের তথ্যের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, যা এই বছর ই-গভর্নেন্স ক্যাটেগরিতে জাতীয় পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছে।
গোলাঘাট জেলার নব কাকোটি, যিনি এই বছরের ২০ মার্চ মারা গেছেন, তাঁর নামও তালিকায় রয়েছে। তাঁর সহকর্মী হারেন বারকটোকি জানান, কাকোটির মৃত্যু শিক্ষা দফতরকে জানান হয়েছিল।
চিরাং জেলার মহিম বসুমতারি, যিনি ১ জানুয়ারি অবসর নিয়েছেন, তিনি বলেন, ‘আমি এখন পেনশনের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, আর মাসিক বেতন আশা করি না!’
জোরহাটের উপ-স্কুল পরিদর্শকের কাছে ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির আবেদন করেছিলেন সহকারী শিক্ষিকা নয়নমনি ফুকন। তাঁর আবেদন মঞ্জুরও হয়েছিল। তিনিও এই তালিকায় আছেন।
এই ঘটনা শিক্ষাবিভাগের সমন্বয়ের অভাব এবং তথ্য সংগ্রহের দুর্বলতার কারণে ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠছে। সরকারি শিক্ষকদের অনুপস্থিতি নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল, বলে করছে শিক্ষক সংগঠনগুলি।