দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে ধুয়েমুছে গিয়েছে কংগ্রেসের লড়াই। একটি আসনে জেতা তো দূরের কথা, দলের ৬৩ জন প্রার্থীর জামানত পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
একদা যেখানে ১৫ বছর শাসন করেছেন শীলা দীক্ষিত, সেই দিল্লিতে অস্তিত্ব সংকটে পড়ল সনিয়া গান্ধীর দল। বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে ব্রাত্য করে দিলেন দিল্লিবাসী।
রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে এবারের নির্বাচনী প্রচারে কোনও চমক দেখাতে পারেনি শতাব্দীপ্রাচীন দল। দিল্লির বাসিন্দাদের মনে বিন্দুমাত্র রেখাপাত করেনি পারিবারিক ঐতিহ্য, বিজেপির সমালোচনা অথবা আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে কংগ্রেস নেতাদের গাফিলতির অভিযোগ।
এরই জেরে মঙ্গলবার নির্বাচনের ফলপ্রকাশ হলে দেখা যায়, ৬৬টি আসনের মধ্যে ৬৩টিতেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থীদের। এই ব্যাপারে ব্যতিক্রম শুধু গান্ধীনগরের কংগ্রেস প্রার্থী অরবিন্দর সিং লাভলি, বদলির প্রার্থী দেবেন্দ্র যাদব এবং কস্তুরবা নগরের প্রার্থী অভিষেক দত্ত। আপ প্রার্থী হিসেবে ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে চাঁদনি চক কেন্দ্র থেকে জিতে আসা অলকা লাম্বা পর্যন্ত এবার কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে জামানত খুইয়েছেন।
দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এ দিন পঞ্জাবের মন্ত্রী সাধু সিং ধরমসোট বলেন, ‘আমরা আগেও শূন্য ছিলাম, এখনও শূন্য। তাই এই হার আমাদের নয়। এ হল বিজেপির পরাজয়।’
২০১৫ সালেও দিল্লিতে কোনও আসন পায়নি কংগ্রেস, পঞ্জাবের মন্ত্রীর কথাও ফের একবার দাগিয়ে দেওয়া হল দলের ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিসংখ্যান।
বিধানসভা নির্বাচনে আপ-এর নিরঙ্কুশ জয়ে টুইটারে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত টুইট করেন রাহুল গান্ধী। তিনি লিখেছেন, ‘মিস্টার কেজরিওয়াল এবং আপ-কে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন জেতার জন্য অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানাই। ’
তাঁর দলের ব্যর্থতার জন্য অবশ্য সমালোচকরা রাহুলের দিশাহীন নেতৃত্বকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। যদিও রাহুল-ঘনিষ্ঠ দলীয় নেতারা এখনও তা মানতে চাইছেন না। এ দিন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিং সুরেজওয়ালা যেমন বলেছেন, ‘বিনম্র চিত্তে ও নতমস্তকে দিল্লির মানুষের জনাদেশকে স্বাগত জানাই। কংগ্রেসকে এবার তৃণমূল স্তর থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই হার আমাদের জন্য হতাশা নয়, দৃঢ়সংকল্পের অনুপ্রেরণা।’
দলীয় মুখপাত্র যে বিবৃতিই দিন, শীলা দীক্ষিতের ছায়া থেকে বেরিয়ে দিল্লির মানুষের সামনে উজ্জ্বল এজেন্ডা দাঁড় করাতে চরম ব্যর্থ কংগ্রেস নেতৃত্বের সামনে এখন সর্বভারতীয় স্তরে অস্তিত্ব রক্ষা করাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।