আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) হতে চলেছে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। অর্থাৎ সরস্বতী পুজোর (২ ফেব্রুয়ারি) ঠিক পরেই ভোট হবে দিল্লিতে। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ৭০টি আসন-বিশিষ্ট দিল্লি বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই ৮ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের গণনা হবে বলে মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার রাজীব কুমার। ইতিমধ্যে সব আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। ৪৮টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। বিজেপি আপাতত ২৯টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।
দিল্লি বিধানসভা ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান
১) মোট ভোটারের সংখ্যা ১.৫৫ কোটি। মহিলা ভোটারের সংখ্যা ৭১.৭৪ লাখ। পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৮৩.৪৯ লাখ। প্রথমবার ভোট দেবেন ২.০৮ লাখ।
২) মোট বুথের সংখ্যা ১৩,০৩৩। ওয়েবকাস্টিং হবে ১০০ শতাংশ।
৩) মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার: যাতে বেশি মানুষ ভোট দেন, সেজন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই বুধবার ভোটগ্রহণ হবে।
কেজরিদের দাপট বজায় থাকবে দিল্লিতে?
এক দশক ধরে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে একচ্ছত্র দাপট দেখিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শাসন করেছে দিল্লিতে। ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৬৭টি আসন জিতেছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল। আর ২০২০ সালে সেই সংখ্যাটা ঠেকেছিল ৬২-তে। লোকসভা নির্বাচনে দুর্দান্ত ফলাফলের কয়েক মাস পরেই হওয়া বিধানসভা ভোটে দু'বারই বিজেপি এক অঙ্কের ঘরে নেমে গিয়েছিল। আর ১৫ বছর ধরে দিল্লি শাসনের পুরোপুরি ধুয়েমুছে সাফ গিয়েছিল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: Delhi CM Atishi: 'এতটা নীচে নামলেন!' কান্নায় ভেঙে পড়লেন দিল্লির মুখ্য়মন্ত্রী
‘ফ্রি’ প্রকল্প- দিল্লিতে ভরসা আপের
এবার অবশ্য আপের কাজটা খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সম্প্রতি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল এবং প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়ার জেলমুক্তির ঘটনায় আপ কিছুটা চাঙ্গা হলেও সার্বিকভাবে আর্থিক দুর্নীতি এবং ‘ধুঁকতে থাকা’ নাগরিক পরিকাঠামোর চ্যালেঞ্জ সামলাতে হচ্ছে কেজরির দলকে।
যদিও আপের দাবি, বিরোধী হওয়ার জন্য কেজরিদের ‘টার্গেট’ করা হয়েছে। আর সেটার ফল বিজেপিকে নির্বাচনে ভুগতে হবে বলে দাবি করেছে আপ। যে আপ এবারের নির্বাচনে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, বিনামূল্যে জল, মহিলাদের জন্য বিনামূল্যে বাসযাত্রার মতো প্রকল্পের উপরে ভরসা করছে। ক্ষমতায় ফিরলে পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ধাঁচে মহিলাদের মাসিক ২,১০০ টাকা প্রদান, প্রবীণদের বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের মতো একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আপ।
আরও পড়ুন: Kejariwal on BJP: গোপনে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে BJP, গুরুতর অভিযোগ কেজরিওয়ালের
'আপদা' সরাতে মরিয়া বিজেপি
অন্যদিকে আপের বিরুদ্ধে যে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেটা দিয়েই নির্বাচনে ঝড় তুলতে চাইছে বিজেপি। শুক্রবারই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার শুরু করেছেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপের নামের সামঞ্জস্য রেখে কেজরিতে শাসনকালকে 'আপদা' (বিপর্যয়) হিসেবে কটাক্ষ করেছেন। দাবি করেছেন যে এবার ক্ষমতাচ্যুত হবে আপ। দিল্লির কুর্সি থাকবে বিজেপির দখলে। যে বিজেপি ২৬ বছরের বেশি সময় ধরে দিল্লির ক্ষমতা দখল করতে পারেনি।
কংগ্রেসের হাল ভয়াবহ দিল্লিতে
বিজেপির মতো অতদিন দিল্লির মসনদ থেকে দূরে না থাকলেও এখন রাজধানীতে কংগ্রেসের হাল ভয়াবহ হয়ে গিয়েছে। ২০১৫ সাল এবং ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে একটাও আসন জিততে পারেননি কংগ্রেস। পাঁচ বছর আগে তো চার শতাংশও ভোট পায়নি শতাব্দীপ্রাচীন দল। আর লোকসভা নির্বাচনেও ভরাডুবি হয়েছে।