দিল্লির মসনদ দখলে হ্যাট্রিক করতে পারলেন না অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর আম আদমি পার্টি এখানে ধরাশায়ী হল। আর রাজধানী বিজেপিরই দখলে গেল। যেখানে বারবার লড়াই করেও আম আদমি পার্টিকে হারাতে পারেনি বিজেপি। সেখানে এবার পদ্ম ফুটল। দীর্ঘ টানাপোড়েন এবং লড়াইয়ের পর রাজধানীর জনতার রায় গেরুয়া শিবিরের দিকেই গেল। সুতরাং তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের। তবে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে পৃথকভাবে নির্বাচনে লড়ে খাতাই খুলতে পারল না কংগ্রেস শিবির। আপাতত এই ছবিটিই পরিষ্কার হয়েছে। পরে পাল্টাতে পারে। কারণ গণনা চলছে। এই আবহে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা জয়রাম রমেশ খোঁচা দিয়েছেন কেজরিওয়ালকে।
এদিকে সকাল থেকেই আম আদমি পার্টিকে মাথা তুলতে দেয়নি বিজেপি। পোস্টাল ব্যালট গণনার সময় থেকেই পিছিয়ে পড়ে আপ। সকাল ১০টা নাগাদ এগিয়ে থাকা আসনের নিরিখে ৩৬টি আসনের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করে পদ্মশিবির। কংগ্রেসের দিল্লিতে শোচনীয় পরাজয় হলেও জয়রাম রমেশ এক্স হ্যান্ডেলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আম আদমি পার্টির কার্যকলাপকে দায়ী করলেন। আর কংগ্রেসের পরাজয় হলেও ভোট বেড়েছে বলে তাঁর দাবি। এক্স হ্যান্ডেলে জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘২০২৫ সালের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আম আদমি পার্টির উপর গণভোট ছাড়া আর কিছুই প্রতিফলিত করে না। ২০১৫ এবং ২০২০ সালে যখন প্রধানমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা বেশি তখন দিল্লির নির্বাচনে একচ্ছত্রভাবে জিতেছিল আম আদমি পার্টি। আর এই ফলাফল সরাসরি অরবিন্দ কেজরিওয়ালের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
অন্যদিকে এই ফলাফল স্পষ্ট হতেই দিল্লির রাস্তায় বাজি, পটকা ফাটিয়ে উৎসবে মেতে ওঠে বিজেপি কর্মী–সমর্থকরা। ঝাড়ুর দাপট আর রইল না। হারের সম্মুখীন হতে হয়েছে আপের হেভিওয়েট প্রার্থীদেরও। নয়াদিল্লি আসন থেকে বিজেপি প্রার্থী প্রবেশ ভার্মার কাছে ৪ হাজারেরও বেশি ভোটে পরাজিত হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। জংপুরা থেকে বিজেপি প্রার্থী তরবিন্দর সিংয়ের কাছে পরাজিত হন মণীশ সিসোদিয়া। ৬৭৫ ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তবে মুখরক্ষা করেন বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী আতিশী। কালকাজি থেকে ৩৫৮০ ভোটে জয়ী হন তিনি। তবে এক্স হ্যান্ডেলে জয়রাম রমেশ লেখেন, ‘কংগ্রেস একাধিক দুর্নীতির কথা সামনে এনেছে। ভোটাররা ১২ বছরের অপশাসন বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: সেবকে বিকল্প করোনেশন সেতু নির্মাণে হাজার কোটির প্রকল্প, কেন্দ্র অর্থ বরাদ্দ করল
কিন্তু কংগ্রেসের এমন হাল হল কেন? এই প্রশ্নও জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে উঠতে শুরু করেছে। জয়রাম রমেশের লেখায় উঠে এসেছে, ‘কংগ্রেস আরও ভাল ফল হবে আশা করেছিল। তবে এটি আমাদের ভোটের হার বাড়িয়েছে। কংগ্রেসের প্রচার খুবই জোরদার ছিল। এটি বিধানসভায় নাও হতে পারে। তবে এটি অবশ্যই দিল্লিতে উপস্থিতি, এমন একটি উপস্থিতি যা লক্ষ লক্ষ কংগ্রেস কর্মীদের নিরন্তর প্রচেষ্টায় নির্বাচনীভাবে প্রসারিত হবে। ২০৩০ সালে দিল্লিতে আবার কংগ্রেসের সরকার হবে।’