দিল্লির বর্তমান শাসকদল আম আদমি পার্টি (আপ)-এর তরফে আবারও ভোটারতালিকায় গরমিল করার অভিযোগ তোলা হল। তাদের বক্তব্য, আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটারতালিকা সংশোধনের নামে প্রচুর ভোটারের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এবং বহু অন্যায্য নাম সেই ভোটারতালিকায় যোগ করা হয়েছে।
এ নিয়ে বুধবার ফের একবার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইসি)-কে চিঠি লিখলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অতিশী মার্লেনা সিং। উল্লেখ্য, এর আগেও এই একই বিষয়ে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। অর্থাৎ - এই নিয়ে দ্বিতীয়বার একই বিষয়ে তাঁকে চিঠি পাঠালেন অতিশী।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, অতিশী অবিলম্বে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়ে এই চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি ভোটারতালিকা সংশোধন সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিয়ে সরাসরি সিইসি-র সঙ্গে কথা বলতে চান।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, বুধবার (৮ জানুয়ারি, ২০২৫) অতিশী যখন সিইসি-কে এই চিঠি পাঠান, তখন দিল্লির ভোট হতে বাকি আর মাত্র ২৭ দিন।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি অতিশী মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তাতেও ভোটারতালিকায় সংশোধন করার নামে গরমিলের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন তিনি এবং সিইসি-র সঙ্গে অবিলম্বে দেখা করতে চেয়ে তাঁর কাছে সময় চেয়েছিলেন।
কিন্তু, তাঁর সেই আবেদন রাখা হয়নি বলে অভিযোগ। অতিশী জানান, গত ৫ জানুয়ারি তিনি যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন, তার জবাবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে কেবলমাত্র একটি প্রাপ্তি স্বীকারের চিঠি এসেছে। এবং সেটাও এসেছে দিল্লির উপ-মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক ললিত মিত্তলের পক্ষ থেকে।
প্রাপ্তি স্বীকারের সেই জবাবি চিঠিতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানানো হয়েছে, ভোটারতালিকা সংশোধন নিয়ে যে অভিযোগগুলি উঠেছে, আঞ্চলিকভাবে সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
খুব স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে এহেন জবাব পেয়ে মোটেও সন্তুষ্ট নন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, এই ঘটনায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককেই সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হবে। কারণ, এই ঘটনা মোটেও আঞ্চলিক নির্বাচনী আধিকারিকের এক্তিয়ারভুক্ত নয়।
অতিশী এই প্রসঙ্গে বলেন, 'এই বিষয়টিকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখা উচিত।'
তিনি আরও বলেন, 'এবার শুধুমাত্র দিল্লিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশ এবং সংবাদমাধ্যমের নজর তাই কেবল এদিকেই থাকবে। তারা নির্বাচন সংক্রান্ত সমস্ত কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখবে। আমরা ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা রাখছি। আশা করছি, তারা অবাধ ও মুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে সবরকম পদক্ষেপ করবে।'
অতিশী জানিয়েছেন, তিনি অবিলম্বে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করতে চান। কারণ, তাঁর একমাত্র লক্ষ্য হল, আসন্ন দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন হোক সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে। এবং সেই প্রক্রিয়ায় যেন কোনও অবস্থাতেই কোনওরকম কারচুপি করার অবকাশ না থাকে।