দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় জামিন পেলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এক লাখ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে শর্তসাপেক্ষে আম আদমি পার্টির (আপ) সুপ্রিমোর জামিন মঞ্জুর করেছে দিল্লির আদালত। সেইসঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ওই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ প্রদানের যে আর্জি জানায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), তাও খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। আর তারপরই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন আপের নেতা-কর্মীরা। দিল্লির মন্ত্রী তথা আপ নেতা অতিশি বলেছেন, ‘সত্যমেব জয়তে।’ উচ্ছ্বাস ধরা পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের আপ নেতাদের গলায়। উত্তর ২৪ পরগনার আপের জেলা সভাপতি তুলিকা অধিকারী বলেন, ‘নায়ক ইজ ব্যাক। আমার নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল জিন্দাবাদ।’
কেজরিওয়ালকে কী কী শর্ত দেওয়া হয়েছে?
কেজরিওয়ালের যে জামিনের আর্জি জানানো হয়েছিল, তা নিয়ে দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চলেছে আদালতে। দিল্লি আবগারি দুর্নীতি মামলায় অন্যান্য অভিযুক্তদের সঙ্গে কেজরির যোগসূত্র আছে বলে তুলে ধরার চেষ্টা করে ইডি। পালটা কেজরির আইনজীবী দাবি করেন যে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণই নেই কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে। সেই সওয়াল-জবাবের পরে বৃহস্পতিবার রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক।
সন্ধ্যায় বিচারক শর্তসাপেক্ষে কেজরির জামিন মঞ্জুর করেন। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন যে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনওরকম বাধা তৈরির চেষ্টা করতে পারবেন না কেজরি। কোনও সাক্ষীকে প্রভাবিত করতে পারবেন না। সেইসঙ্গে যখনই প্রয়োজন হবে, তখনই আদালতে হাজিরা দিতে হবে। তদন্তেও কেজরিকে সহযোগিতা করতে হবে বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে দিল্লির আদালত।
আপ নেতাদের প্রতিক্রিয়া
কেজরিওয়াল জামিন পেতেই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েছেন আপ নেতা। দিল্লির মন্ত্রী সৌরভ ভরদ্বাজ বলেন, 'এটা দেশের জন্য একটা মাইলস্টোন হয়ে থাকল। আমাদের দেশের বিচারব্যবস্থায় আজকের সিদ্ধান্তটা বড় উদাহরণ হয়ে থাকল। আর্থিক তছরূপ বিরোধী আইনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে রেহাই পান। সাধারণত নিম্ন আদালত রেহাই দেয় না। আর এবার ঠিক সেটাই হল। তাতে স্পষ্ট হয়ে গেল যে কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে কোনও প্রমাণ নেই।'
একইসুরে আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং বলেন, 'এরকম সময় যে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন, তা গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করবে। দিল্লির মানুষের জন্য এটা দারুণ খবর। এখনও পর্যন্ত ইডি যে সওয়াল করেছে, তা পুরোপুরি মিথ্যে। কেজরিওয়ালকে ফাঁসানোর জন্য এই ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হয়েছে।'
জামিনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে ইডি
ইডি সূত্রে খবর, কেজরির জামিনের বিরুদ্ধে শুক্রবার সকালেই সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে কেন্দ্রীয় সংস্থা। যদিও সরকারিভাবে আপাতত কিছু জানানো হয়নি।যে ইডি গত ২১ মার্চ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছিল। তারপর ১০ মে কেজরিকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১ জুন পর্যন্ত তাঁকে জামিনে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারপর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ২ জুন আত্মসমর্পণ করেন কেজরি। আর ২০ জুন তাঁকে সাধারণ জামিন দেওয়া হল।