দিল্লিতে ক্রমেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে চলেছে। তারই মাঝে দিল্লির সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে একাধিক বন্দোবস্ত নিয়েছে। দিল্লির ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ইতিমধ্যেই রাজধানীর কোভিড গাইডলাইন নিয়ে কিছুটা পর্যালোচনা করেছে। আর তারপর ডিডিএম-এর তরফে বিভিন্ন প্রাইভেট অফিসের কর্মীদের জন্য 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' এর মাধ্যমে কর্ম প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্পর্কে বড় বার্তা দিয়েছে।
ডিডিএমএ-এর তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির সমস্ত প্রাইভেট সংস্থা যেন ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর মাধ্যমে কাজ বাধ্যতামূলক করে। তবে, এই কাজের প্রক্রিয়ার আওতা থেকে বাদ যাবেন তাঁরাই যাঁদের ক্ষেত্রে দিল্লি সরকার পূর্ব ঘোষিত বিধিতে 'ছাড়' ঘোষণা করেছে। উল্লেখ্য, এর আগে দিল্লি সরকারের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি একাধিক ক্ষেত্রে কোভিড বিধির মাঝেও ছাড়ের বার্তা দিয়েছিল। তবে সেসব ক্ষেত্রে একাধিক নিয়মের সাপেক্ষে সেই ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এদিকে, এই নয়া নির্দেশিকার আগে , যে নির্দেশিকা দিল্লি সরকার প্রকাশ্যে আনে, সেখানে প্রাইভেট অফিসে ৫০ শতাংশকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর মাধ্যমে কাজ চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই অবস্থান থেকে সরে আপাতত দিল্লি সরকার , প্রাইভেট অফিসের কর্মীদের জন্য ওয়ার্ক ফ্রম হোম-এর বার্তা দিয়েছে। নয়া গাইডলাইন অনুযায়ী, কেবল অবশ্যিক ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িত প্রাইভেট সংস্থার কর্মীরা কোভিড বিধি থেকে ছাড় পাচ্ছেন অফিসে যাওয়ার জন্য। প্রাইভেট সংস্থার যে কর্মীরা দিল্লিতে অফিসে যেতে পারবেন, তাঁরা হলেন প্রাইভেট ব্যাঙ্ক, মিডিয়া ইনশিওরেন্স সংস্থা , মেডিক্লেইম সংস্থা , ফার্মাকিউটিক্যাল সংস্থার কর্মী। এছাড়াও নয়া নির্দেশিকায় দিল্লি প্রশাসন জানিয়ে দিয়েছে যে, রাজধানীর সমস্ত রেস্তোরাঁ ও পানশালা আপাতত বন্ধ থাকবে। সেখান থেকে খাবার নিয়ে যাওয়া যাবে। তবে বসে সেখানে খাওয়া যাবে না। দিল্লিতে আপাতত বন্ধ রয়েছে সিনেমা, থিয়েটার, স্পা সহ একাধিক ক্ষেত্র। উল্লেখ্য, দিল্লিতে গত ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকেই বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কোভিডের বাড়বাড়ন্তের জেরে এমন সিদ্ধান্ত নেয় কেজরিওয়াল সরকার। বিয়ে বা অন্ত্যেষ্টির জমায়েতের ক্ষেত্রে ২০ জন আমন্ত্রিতের কথা নির্দেশ করা হয়েছে গাইডলাইনে।
দিল্লি প্রশাসনের তরফে এই নয়া নির্দেশ দিয়েছেন লেফ্টনেন্ট গভর্নর অনিল বাইজাল। সোমবারই দিল্লি সরকারের তরফে লেফ্টনেন্ট গভর্নর সহ মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তির বৈঠক আয়োজন করা হয়। সেখানে রাজধানীর কোভিড বিধি নিয়ে আলোচনা করা হয়। তারপরই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, দিল্লিতে জারি রয়েছে রাতের কার্ফু। রাত ১০ টা থেকে ভোর ৫ টা পর্যন্ত জারি রয়েছে কার্ফু। শুক্রবার রাত ১০ টা থেকে সোমবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত জারি থাকছে সপ্তাহান্তের কার্ফু। তবে যাবতীয় গণনপরিবহণ ১০০ শতাংশ চলাচল করছে। ত উল্লেখ্য, সোমবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে শেষ একদিনে আক্রান্ত ১৯,১৬৬ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। তবে, কেজরিওয়াল প্রশাসন জানিয়েছে, আপাতত ওমিক্রন নির্ভর নয়া কোভিড স্রোত মোকাবিলায় যাবতীয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রস্তুত সরকার।