ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানী দিল্লি। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অনুযায়ী, ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা ৩৬ মিনিট নাগাদ এই ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল দিল্লির আশেপাশেরই কোনও অঞ্চল। ভূপৃষ্ঠ থেকে পাঁচ কিলোমিটার গভীরে এই কম্পনের উৎসস্থল। দিল্লির পাশাপাশি উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় এই কম্পন অনুভূত হয়েছে। এদিকে ভূমিকম্পের জেরে আতঙ্কিত হয়ে বহু মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছিলেন। তবে এই ভূমিকম্পের জেরে কোনও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। (আরও পড়ুন: 'প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে', যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে ভারতের হাত ধরার বড় বার্তা ইউনুস)
আরও পড়ুন: সীমান্তে কাঁটাতার জট কাটবে? বাংলাদেশি উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে জয়শংকর
এদিকে সোমবার ভোর থেকেই বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ট্রেন ধরতে যাত্রীদের ভিড় ছিল নয়াদিল্লি রেল স্টেশনে। ভূমিকম্পের জেরে সেখানকার বহু যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএনআই। এই আবহে নয়াদিল্লি রেল স্টেশনের এক চায়ের স্টলের বিক্রেতাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'একদম যেন ঝটলা লাগল। বিষয়টা স্বাভাবিক ছিল না। মানে সবকিছু নড়ছিল। কাউন্টার নড়ছিল, জিনিসপত্র নড়ছিল। হয়ত ২ সেকেন্ডের জন্যেই অনুভূত হয়েছিল সেই কম্পন। আমাদের সামনে খদ্দের ছিলেন। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে চেঁচাতে শুরু করে দিয়েছিলেন। অল্পক্ষণের জন্যে হলেও বেশ তীব্র ছিল সেই কম্পন। একার তো মনে হয়েছিল কোনও ট্রেনের সংঘর্ষ হল কি না।'
এদিকে এক যাত্রী এই প্রসঙ্গে বলেন, 'আমার তো মনে হয়েছিল মাটির তলা দিয়ে খুব জোরে কোনও ট্রেন যাচ্ছে। সবকিছু নড়ছিল। পিছনে এই কাচও কাঁপছিল।' অপর এক যাত্রী বলেন, 'খুব অল্প সময়ের জন্যেই কম্পন অমুভূত হয়। তবে সেটা বেশ তীব্র ছিল। মনে হচ্ছিল যেন খুব জোরে কোনও ট্রেন ছুটে আসছে।' এদিকে লাউঞ্জে থাকা এক যাত্রী নিজের অভিজ্ঞতা বয়ান দিতে গিয়ে বলেন, 'আমি লাউঞ্জে অপেক্ষা করছিলাম। তবে ভূমিকম্প হতেই সবাই ছুটে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। মনে হচ্ছিল যেন কোনও ব্রিজ বা কিছু যেন ভেঙে পড়েছে।'
এর আগে গত ৭ জানুয়ারি তিব্বতে তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে আশেপাশের ৫টি দেশে এর কম্পন অনুভূত হয়েছিল। উত্তরে দিল্লি থেকে পূর্ব ভারতের কলকাতা এমনকী উত্তরপূর্ব ভারতেও এই কম্পন অনুভূত হয়েছিল। সেই ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। রিপোর্ট অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে ৭.১ মাত্রার ছিল সেই ভূমিকম্প। নেপালের গোকর্ণেশ্বরের কাছে লোবুচে থেকে ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং তিব্বতের শিগাতসে থেকে ৩৪ কিলোমিটার দূরে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ মিটার গভীরে এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল। এদিকে প্রাথমিক কম্পনের পরেও একধিক আফটারশকে কেঁপে উঠেছিল গোটা অঞ্চল।