চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটল রাজধানী দিল্লিতে। পুত্র সন্তান চেয়েছিল এক গৃহবধূর স্বামী এবং তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু, গৃহবধূর যমজ কন্যা সন্তান হওয়ায় তাদের হত্যা করে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন গৃহবধূ। তার ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। তবে অভিযুক্তরা পলাতক। ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লির পুথ কালান এলাকায়। এই ঘটনায় আবারও দেশে শিশু কন্যা হত্যার বিষয়টি সামনে এসেছে।
আরও পড়ুন: বেলেঘাটা খুন হওয়া শিশুর বাবা কে? জানতে DNA পরীক্ষার অনুমতি দিল আদালত
জানা যাচ্ছে, গৃহবধূর মায়ের বাড়ি হরিয়ানার রোহতাকে। এফআইআর অনুযায়ী, মহিলাটি ২০২২ সালে বাইরের দিল্লির পুথ কালানের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু, সেই বৈবাহিক সম্পর্ক সুখের হয়নি। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক চেয়ে তাকে নিয়মিত হয়রানি করা হতো। গৃহবধূর শ্বশুর বাড়ির লোকজন চেয়েছিল সে যেন একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়। কারণ তারা কন্যা সন্তান মোটেও পছন্দ করত না।
আরও অভিযোগ, মহিলা গর্ভবতী হওয়ার পরেই তাকে লিঙ্গ পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কিন্তু, তিনি তা করতে অস্বীকার করেছিলেন। সম্প্রতি দুই যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। এরপর তার স্বামীর পরিবার নবজাতকদের সঙ্গে নিয়ে যায়। তারা প্রতিশ্রুতি দেয় যে শিশুদের ভালভাবে যত্ন নেবে। তখন প্রসবের পর মহিলা সেরে উঠতেই নিজের সন্তানদের সম্পর্কে জানতে চাইলে তার স্বামী জানায় দুজনেই অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছে।
এই ঘটনায় মহিলা ও তার পরিবারের সন্দেহ হয় যে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা। এরপর পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে, দুই নবজাতককে পুঁতে ফেলা হয়েছে। এই ঘটনায় আদালতের নির্দেশে পুলিশ মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য পাঠায়। তবে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তরা পলাতক।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এশিয়ান সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটসের ২০১৬ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কন্যার চেয়ে পুত্রকে অগ্রাধিকার দেওয়াই হল দেশে কন্যা ভ্রূণ হত্যার প্রধান কারণ। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতে কন্যা ভ্রূণ হত্যার হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। প্রসঙ্গত, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৫ ধারায় বলা রয়েছে, শূন্য থেকে এক বছর বয়সি কন্যা শিশুকে হত্যা করা গুরুতর এবং জামিন অযোগ্য অপরাধ।