দিওয়ালি পরবর্তী দিল্লির বায়ুর গুণমান সূচক (একিউআই) বলছে, রাজধানী শহরে বায়ুর গুণমান এখনও 'খুব খারাপ'। কিন্তু, তথ্য অনুসারে - এ হল 'মন্দের ভালো'!
কেন একথা বলা হচ্ছে? কারণ, দিওয়ালির পরই সাধারণত দিল্লির বায়ু দূষণ আরও বাড়ে এবং এই সময়টায় বায়ুর গুণমান 'খুব খারাপ' স্তর থেকে নেমে 'গুরুতর' হয়ে যায়। কিন্তু, এবার সেটা হয়নি।
ফলত, ২০১৫ সালের পর ২০২৪ সালে এসে দিওয়ালি পরবর্তী দিল্লি শহর 'দ্বিতীয় বিশুদ্ধতম' বায়ু পেল। তথ্য বলছে, বায়ুপ্রবাহের কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সময়ে যার গতি ছিল ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার।
তবে, এর অর্থ কিন্তু এমনটা নয় যে দিল্লিতে বায়ু দূষণ একেবারে কমে গিয়েছে। মোটেই তেমনটা হয়নি। বরং, দূষণের মাত্রা নাগাড়ে বেড়েছে। যেমন - বৃহস্পতিবার বিকেলে দিল্লির একিউআই ছিল ৩২৮। মধ্যরাতে তা বেড়ে হয় ৩৩৮। শুক্রবার সকাল ৯টায় আরও বেড়ে হয়ে যায় ৩৬২।
স্বাভাবিকভাবেই ভাবা হয়েছিল, এরপর দূষণের মাত্রা আরও বাড়বে। কিন্তু, হঠাৎই দিল্লি জুড়ে বাতাসের বেগ বাড়তে শুরু করে। যার ফলে ঘন ধোঁয়াশার চাদরও পাতলা হয় বেশ কিছুটা।
এরই ফলস্বরূপ, শুক্রবার বিকেল ৪টে নাগাদ দিল্লির একিউআই কমে হয় ৩৩৯। সন্ধে ৭টায় তা আরও কমে নেমে যায় ৩২৩ পর্যন্ত।
প্রসঙ্গত, এই সময়টায় রাজধানী শহর লাগোয়া বিভিন্ন এলাকায় ফসলের খড় পোড়ানোর ফলে এমনিতেই দূষণের মাত্রা থাকে ঊর্ধ্বমুখী। তার উপর দিওয়ালির আতসবাজি পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তোলে।
এছাড়াও, স্থানীয় বিভিন্ন উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে বিষাক্ত ও দূষিত ধোঁয়া পরিবেশে মিশ্রিত হয়। যার ফলে বছর শেষ হতে হতে দিল্লির দূষণও বাড়তে থাকে।
স্কাইমেট মেটেরিওলজির সহ-সভাপতি মহেশ পলওয়ান্ত এই প্রসঙ্গে জানান, তাপমাত্রার সঙ্গে দূষণের এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। যা অত্যন্ত জটিল।
তিনি বলেন, 'তাপমাত্রা যত বাড়ে দূষণের মাত্রাও তত বাড়ে। কারণ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি হলে দূষিত পদার্থগুলি আরও বেশি করে বাতাসে মিশতে পারে। কিন্তু, তাপমাত্রা কম হলে সেই পদার্থগুলি ভূ-পৃষ্ঠের একেবারে কাছেই আটকে থাকে। ফলে বাতাসে দূষণ কম ছড়ায়।'
মহেশ জানান, যেখানে শীতকালে দিল্লির বায়ুতে দূষিত পদার্থ মিশ্রিত হওয়ার ঘটনা ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ২০০-৩০০ মিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, সেখানে বৃহস্পতিবারও ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ২,১০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় এই মিশ্রণ ঘটেছে।