ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে দেশ। আরজি কর কাণ্ডের পর এই ইস্যুতে তোলপাড় দেশ। তারই মধ্যে দিল্লি হাইকোর্টে উঠল অপ্রাকৃতিক যৌনতা নিয়ে শাস্তি সম্পর্কে একটি মামলা। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় অপ্রাকৃতিক যৌনতা নিয়ে শাস্তি বিধানের অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে ছিল এই মামলা। মামলার পরই এই ইস্যুতে শাস্তিবিধানের অনুপস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রকে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
যে মামলা দিল্লি হাইকোর্টে উঠেছিল, সেখানে বলা হচ্ছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় নেই আইপিসি ৩৭৭ ধারা। এরফলে, সমলিঙ্গের অ-সম্মতিমূলক যৌন ক্রিয়াকলাপে যে নিরাপত্তা ছিল তা উঠে গিয়েছে বলে মামলায় দাবি করা হয়। এছাড়াও বল হয়েছে, এই বিধানটি জরুরি মানবিক সম্মান ও নিরাপত্তার দিক থেকে, বিশেষত LGBTQIA+ গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে তা খুবই প্রাসঙ্গিক। যে পিটিশন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে ওঠে, তাতে বলা হচ্ছে, যদি একজন পুরুষ, অপর পুরুষের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হন, তাহলে তার শাস্তি বিধান নেই ন্যায় সংহিতায়। এর আগে এই নিয়ে আইপিসি ৩৭৭ ছিল। তবে তার জায়গায় আসা ন্যায় সংহিতায় এই আইপিসি ৩৭৭ এর জায়গায় কিছু আসেনি। এই বিষয়ে দিল্লি হাইকোর্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা কেন্দ্রকে দিয়েছে। হাইকোর্ট আজ কেন্দ্রকে বলেছে, ৩৭৭ ধারা বাদ দিয়ে অপরাধের জন্য শাস্তির ক্ষেত্রে কোনও শূন্যস্থান থাকতে পারে না। এরপরই বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রকে পদক্ষেপের কথা বলা হয়। কেন্দ্রকে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে কোর্ট। এই ইস্যুটি নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন জ্ঞানতব্য গুলাটি। দিল্লি হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মনমোহন ও বিচারপতি গেলেলার বেঞ্চে এই মামলা ওঠে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে স্থায়ী আইনজীবী অনুরাগ আহলুওয়ালিয়া জানান, বিষয়টি বিবেচনাধীন ছিল এবং এই ইস্যুতে একটি সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি নেওয়া হবে যার জন্য কিছু সময়ের প্রয়োজন হবে। কোর্ট বলছে, একটি অপরাধের শাস্তিতে শূন্যস্থান থাকতে পারে না। যদি আজ এই ধরনের কিছু ঘটে যায়, তাহলে কী হবে, প্রশ্ন তুলছে কোর্ট। শাস্তি বিধানে শূন্যস্থানের জেরে এই ধরনের অপরাধ, কেবল শরীরে আঘাত হানা সংক্রান্ত অপরাধের বিধানের মধ্যে পড়ে যাবে কিছু সময়ের জন্য। দিল্লি হাইকোর্ট বলেছে, যে সরকার আইপিসির ৩৭৭ ধারার মাধ্যমে মোকাবিলা করা অ-সম্মতিহীন সমকামী যৌন অপরাধকে, অপরাধীকরণের জন্য, একটি অধ্যাদেশ আনার কথাও বিবেচনা করতে পারে।