শিশুদের যৌন শোষণ থেকে রক্ষা করার জন্য পকসো আইন আনা হয়েছিল। সম্মতিসূচক প্রেমের সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার জন্য আনা হয়নি এই আইন। এমনই পর্যবেক্ষণ করল দিল্লি হাই কোর্ট। তবে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি জসমিত সিং বলেন, ‘প্রতিটি মামলাকে আলাদা ভাবে দেখতে হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘটনা এবং পরিস্থিতি বিচার করতে হবে। তারপরই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাবে।’
দিল্লির উচ্চ আদালতের বিচারপতি বলেন, ‘আমার মতে পকসো-র উদ্দেশ্য ছিল ১৮ বছরের কম বয়সি শিশুদের যৌন শোষণ থেকে রক্ষা করা। এটা কখনও তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সম্মতিমূলক রোমান্টিক সম্পর্ককে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার উদ্দেশ্যে আনা হয়নি। তবে এটি প্রতিটি মামলার ঘটনা এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হবে। এমন কিছু ঘটনাও ঘটে থাকতে পারে যেখানে যৌন অপরাধ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিকে চাপ বা মানসিক আঘাত দিয়ে সেই বিবাদ মেটাতে বাধ্য করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের জুন মাসে ১৭ বছর বয়সি একটি মেয়ে একজনকে বিয়ে করেছিলেন। বিবাহিত সেই মেয়েটি বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক। এদিকে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এই আবহে হাই কোর্টের চেম্বারে গিয়ে বিচারপতিকে একান্ত বয়ান দিয়েছেন সেই বিবাহিত তরুণী। তাঁর বক্তব্য, কারও চাপে পড়ে তিনি এই বিয়ে করেননি। তিনি নিজে স্বামীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তিনি আরও দাবি করেন যে তিনি তাঁর স্বামীর সঙ্গেই থাকতে চান। এই আবহে বিচারপতি পর্যবেক্ষণ করেন, ‘এখানে কেউ তরুণীর ওপর জোর করেনি বিয়ে করার জন্য। দুজনের সম্মতিতেই তাঁদের মধ্যে যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।’ এই আবহে অভিযুক্ত স্বামীকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা করেন বিচারপতি। বিচারপতি বলেন, ‘ভুক্তভোগীর বক্তব্য উপেক্ষা করা এবং অভিযুক্তকে কারাগারে ভুগতে দেওয়ার কোনও মানে হয় না এই মামলায়। এতে ন্যায়বিচার বিকৃত হবে।’