মুঘল সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছে ১৫০ বছরেরও আগে। তাদের তৈরি বিভিন্ন সৌধ এখনও বিদ্যমান রয়েছে ভারতে। তার মধ্যে অন্যতম হল দিল্লির লালকেল্লা। এই লালকেল্লা থেকেই প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এবার উত্তরাধিকার সূত্রে সেই লালকেল্লাকে নিজেদের সম্পত্তি বলে দাবি করে বসলেন মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয়-এর প্রপৌত্র প্রয়াত মির্জা মহম্মদ বেদার বখতের বিধবা স্ত্রী সুলতানা। তবে এত বছর পর লালকেল্লার দাবিকে যুক্তিযুক্ত মনে হয়নি আদালতের। শেষ পর্যন্ত সেই আবেদন খারিজ করে দিল হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: লালকেল্লা বিক্ষোভে অভিনেতা দীপ সিধু-সহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
জানা যাচ্ছে, মুঘলদের সম্পত্তি হিসেবে লালকেল্লা উত্তরাধিকার চেয়ে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা। সেই মামলায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি বিভু বাখরু এবং বিচারপতি তুষার রাওয়ের বেঞ্চ মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয়। এর আগে আদালতের একক বেঞ্চ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের সুলতানা বেগমের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল। আড়াই বছরেরও বেশি সময় বিলম্বের পরে তিনি সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন।
যদিও দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে সুলতানা বেগম জানান, শারীরিক অসুস্থতা ও মেয়ের মৃত্যুর কারণে তিনি আবেদন করতে পারেননি। বেঞ্চ বলেছে, ‘আমাদের কাছে এই যুক্ত অপর্যাপ্ত বলে মনে হয়েছে।’ এরপরেই হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করে দেয়। এর আগে ২০২১ সালে একক বেঞ্চ যখন লালকেল্লার দখলের জন্য সুলতানা বেগমের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল তখন আদালত জানিয়েছিল, ১৫০ বছরেরও বেশি সময় পরে আদালতে আসার কোনও যুক্তি নেই।
সুলতানা বেগম নিজের আবেদনে বলেছিলেন, যে তিনিই লাল কেল্লার আসল মালিক। কারণ তিনি এই সম্পত্তি তাঁর পূর্বপুরুষ বাহাদুর শাহ জাফর দ্বিতীয় থেকে পেয়েছিলেন। ভারত সরকার অবৈধভাবে এই সম্পত্তি দখল করে রেখেছে।
বিধবার আইনজীবী বিবেক মোরে জানান, ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহের পর ব্রিটিশরা পরিবারটিকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করেছিল। যার পরে সম্রাটকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হয়েছিল এবং লাল কেল্লার দখল জোর করে নেওয়া হয়েছিল। আবেদনে ১৮৫৭ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সরকারের অবৈধ দখলের জন্য ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি আবেদনকারীকে লাল কেল্লা হস্তান্তর করার বা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশের আবেদন জানানো হয়েছিল।
মহিলা আবেদনে আরও জানিয়েছেন, ১৯৬০ সালে জওহরলাল নেহরুর প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় তাঁর সরকার মির্জা মুহাম্মদ বেদার বখতকে বাহাদুর শাহের উত্তরাধিকারী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তার তথ্যও তিনি আদালতে পেশ করেন।