দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোটি কোটি টাকার আর্থিক দুর্নীতি হচ্ছে। সেই জায়গায় মাত্র ১০৫ টাকার অনিয়মের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়েছিল দিল্লির ছোলে ভাটুরে বিক্রেতার। অবশেষে দিল্লি হাইকোর্টে স্বস্তি পেলেন তিনি। আদালত অবিলম্বে ছোলে ভাটুরে বিক্রেতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালতের মতে, এভাবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হলে তাঁর দৈনন্দিন জীবিকার উপর প্রভাব পড়বে। এর ফলে তাঁর পরিবার প্রভাবিত হবে।
আরও পড়ুন: ‘লালকেল্লা আমাদের’ দখল চেয়ে হাইকোর্টে মুঘল বংশধরের পুত্রবধূ, খারিজ হল মামলা
হাইকোর্ট বলেছে, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার ফলে আবেদনকারীর যে অসুবিধা হচ্ছে তা বোঝাই যাচ্ছে। তিনি ছোলে ভাটুরে বিক্রি করেন এবং সংসার চালানোর জন্য দৈনিক উপার্জনের উপরই নির্ভরশীল।
বিচারপতি মনোজ জৈন বলেছেন, ‘আবেদনকারী যে সাইবার ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত তা নিশ্চিত না করেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের উপর এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা এই মুহুর্তে ন্যায়সঙ্গত এবং টেকসই হবে না।’ প্রসঙ্গত, একটি সাইবার জালিয়াতির মামলায় ছোলে ভাটুরে বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে ১০৫ টাকা ঢুকেছিল। সেই ঘটনার তদন্তে নেমে ছোলে ভাটুরের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। এরপরেই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
আদালতের মতে, আদালত বলেছে যেহেতু ১০৫ টাকার লেনদেন তাঁর অ্যাকাউন্টে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তাই আবেদনকারীকে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করার অনুমতি দিতে হবে।আদালত উল্লেখ করেছে,তদন্তকারী সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, সাইবার জালিয়াতির সঙ্গে ৭১,০০০ টাকা জড়িত। যার মধ্যে ১০৫ টাকা শুধুমাত্র আবেদনকারীর অ্যাকাউন্টে এসেছে। আবেদনকারী যে কোনও ষড়যন্ত্র বা সাইবার জালিয়াতির অংশ ছিল তা ইঙ্গিত করার মতো কোনও তথ্য নেই। এমনকী তিনি এই অপরাধের মোটেও যুক্ত নাও হতে পারেন। কেবলমাত্র একজন অনিচ্ছাকৃত সুবিধাভোগী হতে পারেন।
আদালত বলেছে, এই অবস্থায় আবেদনকারীর পুরো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার ফলে একটি গুরুতর এবং প্রতিকূল প্রভাব পড়বে তাঁর উপার্জনের ক্ষেত্রে। এছাড়া এরফলে মর্যাদার সঙ্গে তাঁর বেঁচে থাকার অমূল্য অধিকারকে লঙ্ঘন করা হবে। এটি সরাসরি তাঁর জীবিকার অধিকারকে খর্ব করে, যা সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবনের অধিকারের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।
প্রসঙ্গত, আবেদনকারী জানান, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এই মুহূর্তে ১ লক্ষ ২২ হাজার টাকা রয়েছে। কিন্তু, অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হওয়ার ফলে তিনি সেই অর্থ ব্যবহার করতে পারছেন না। তিনি জানান, যে বেশিরভাগ গ্রাহক তাঁর কাছ থেকে ছোলে ভাটুরে কেনার পরে অনলাইনে অর্থ প্রদান করে। তাই সন্দেহজনকভাবে অর্থ নেওয়ার কোনও কারণ নেই।