পরপর ২৩টি বোমা মারার হুমকি চিঠি পেল বেশ কয়েকটি স্কুল। আর তাতেই তোলপাড় কাণ্ড দেখা গেল রাজধানী নয়াদিল্লিতে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে এই খবর মিলেছে। ইমেল করে এই বোমা মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই বোমা মারা হবে বলে প্রবল আতঙ্ক তৈরি হয় স্কুলগুলিতে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে স্কুলগুলির কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিতে বাধ্য হয়। কারণ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই বহু অভিভাবক তাঁদের ছেলে–মেয়েদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দেন। অবশেষে পুলিশ তদন্ত নেমে জানতে পারল এই কাজের নেপথ্যে আছে এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
এই তথ্য পেয়েই ওই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রকে ধরে পুলিশ। আর ওই ছাত্র পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে যে, সে এই কাজ করেছে। ইমেল সে নিজেই পাঠিয়েছে। এই তথ্যের কথা জানান দিল্লির দক্ষিণের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ অঙ্কিত চৌহান। আর তিনটি স্কুলে যে বোমা মারার হুমকি ইমেল এসেছে তা সেখানকার ছাত্রদের থেকেই। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল তদন্তে নেমে দেখতে পায় স্কুলের ছাত্ররাই এই কাজে জড়িত। কিন্তু কেন এমন কাজ করল ছাত্ররা? পুলিশ সূত্রে খবর, এই ছাত্রদের পরীক্ষার প্রস্তুতি সেভাবে নেওয়া হয়নি। অথচ স্কুল পরীক্ষার দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: সবলা মেলায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি নেই কেন? ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় কাণ্ড প্রাঙ্গণে
সেক্ষেত্রে পরীক্ষা দিলে অকৃতকার্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পরীক্ষা যাতে বাতিল করে স্কুল সে জন্যই এই বোমা মারার হুমকি দেওয়া হয়েছে। আর এই ছাত্রদের জেরা করে জানা গিয়েছে, এই বোমার হুমকি দেওয়ার বুদ্ধি দিয়েছে সিনিয়র ছাত্ররা। তারা শুধু সেটা কাজে লাগিয়েছে। এই কাণ্ড জানার পর পুলিশের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের কড়াভাবে সতর্ক করে বাবা–মাকে ডেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রোহিনী এবং পশ্চিম বিহারের স্কুলেও ছাত্ররা হুমকি মেল পাঠিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে দেয় বলে অভিযোগ। আর এই কারণে স্কুলের পঠনপাঠনে ব্যাঘাত ঘটেছে।
এছাড়া ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে স্কুলগুলি ইমেল পেয়েছে এই বোমার মারার হুমকি দিয়ে। তার সঙ্গে ১ লক্ষ ডলার দাবি করা হয়েছিল। সেটা না পেলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে স্কুল উড়িয়ে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। শুধু ৯ ডিসেম্বর তারিখে ৪৪টি স্কুল এই হুমকি মেল পেয়েছিল। ১৩ ডিসেম্বর ৩০টি স্কুল বোমা মারার হুমকি মেল পায়। আর ১৪ ডিসেম্বর ৮টি স্কুল এমন হুমকি মেল পায়। এমনকী গত বছরের মে মাস পর্যন্ত ৫০টি বোমা মারার হুমকি মেল পেয়েছিল স্কুল, হাসপাতাল, ব্যাঙ্ক এবং বিমানবন্দর। যা কিনা বড় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।