১৫ বছর আগের একটি অপহরণ এবং খুনের মামলার নিষ্পত্তি করল দিল্লি পুলিশ। মহেশ চৌধুরি নামে ৪৫ বছরের এক ব্যক্তিকে ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল অপহরণ করে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় পুলিশ হরি ওম নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। দিল্লির ক্রাইম ব্রাঞ্চের সহকারী সাব ইন্সপেক্টর সঞ্জীব তোমরের নেতৃত্বে এই ঘটনার তদন্ত হয়। অবশেষে গত মে মাসে সেই অপহরণ এবং হত্যার ঘটনার কিনারা করেন ওই পুলিশ অফিসার।
১৫ বছর আগে ৪৫ বছর বয়সী মহেশচন্দ্রকে কানপুর যাওয়ার সময় অপহরণ করেছিল হরি ওম নামে ওই ব্যক্তি। বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে মহেশ চৌধুরী তার স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন হরি ওমের জন্য ডিমের কারি রান্না করতে। তার সঙ্গে সে কানপুর যাবে। সেই সূত্র ধরেই তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। মহেশ চৌধুরী বদরপুরের কাছে মোলারবন্দ এক্সটেনশন এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার একটি এসইউভি গাড়ি ছিল। সেই গাড়ি চালিয়েই তিনি সংসার চালাতেন। এরপর ২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল তিনি নিখোঁজ হয়ে যান। তারপর পরিবারের তরফে নিখোঁজের ডায়েরি করা হয়।
তদন্তে নেমে প্রথমে পুলিশ প্রথমে হরি ওম নামে ওই ব্যক্তির সম্পর্কে কিছুই জানতে পারেনি। শুধু মহেশের মোবাইলের কল ডিটেলস খতিয়ে দেখে জানতে পেরেছিল, যে কানপুরের কাছে আকবরপুরে শেষ অবস্থান খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। কানপুর যাওয়ার আগে, চৌধুরী একটি নম্বর থেকে তিন বা চারটি কল পেয়েছিলেন। সেটি ছিল কানপুরের জাঠিয়াপুর গ্রামের বাসিন্দা হরি ওমের। এরপরেই হরি ওমকে মূল সন্দেহভাজন ধরে নিয়ে তদন্ত করতে থাকে পুলিশ।
এরপর তাকে ধরার জন্য একের পর এক পুলিশ উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাটে অভিযান চালায়। কিন্তু, তার কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি যে সময় ঘটেছিল সেই সময় তদন্তকারী অফিসার তোমর পুলিশের কনস্টেবল ছিলেন। এরপর দীর্ঘ দুই বছর ধরে হরি ওমের হদিস না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত পুলিশ ২০০৯ সালে কেসটিকে অমীমাংসিত রেখে দিয়ে বন্ধ করে দেয়। সেই সঙ্গে হরি ওমকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কারের কথাও ঘোষণা করেছিল পুলিশ। কিন্তু, খাতায় কলমে কেসটি বন্ধ হয়ে গেলেও তোমর তখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে তদন্তকারী অফিসার তোমর বলেন, ‘আমি আমার ইনফরমারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছিলাম এবং যতটা সম্ভব আমি তাদের পাশে থেকেছি। তারাও আমাকে নিরাশ করেনি। ১০ মে তাদের একজন আমাকে এক সন্দেহভাজন ব্যক্তির গতিবিধি সম্পর্কে বলেছিলেন। এরপর আমরা ২৭ মে অভিযান চালিয়ে হরি ওমকে গ্রেফতার করি।’ পুলিশ ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, চৌধুরীর গাড়িটি চুরি করতে চেয়েছিল ওম এবং তার বন্ধু। এরজন্য প্রথমে তারা চৌধুরীকে প্রথমে মদ্যপান করায়। এরপর চৌধুরী নেশায় আসক্ত হয়ে পড়লে তাকে গাড়ির মধ্যে ইট দিয়ে মাথা ফেললে খুন করেছিল হরি ওম এবং তার বন্ধু। তদন্তকারী অফিসার জানান, এই মামলায় আরো একজনকে গ্রেফতার করার প্রয়োজন রয়েছে। তার সন্ধান চালানো হচ্ছে।