গত বছর নয়ডায় এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান কর্মী খুনে এক মহিলা গ্যাংস্টারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত মহিলার আসল নাম কাজল ক্ষত্রী। তিনি লেডি ডন নামেই পরিচিত। কাজল কুখ্যাত গ্যাংস্টার কপিল মানের স্ত্রী। দিল্লি ক্রাইম ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা গত বুধবার লেডি ডনকে গ্রেফতার করে। অভিযোগ, এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান কর্মী সুরজ মনকে ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তিনি খুন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: বিমানকর্মী খুন, জমি নিয়ে ২ পরিবারের লড়াই পরিণত হয়েছিল গ্যাং ওয়ারে, ধৃত ২
৮ মাস আগে নয়ডায় খুন হন সুরজ মান। তারপর থেকে লেডি ডনকে হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়ায় পুলিশ। তবে এতদিন লেডি ডন বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে গ্রেফতারি এড়াচ্ছিলেন। এমনকী তার মাথার দামও ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করা হয়েছিল। শেষমেশ দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাকে পাকড়াও করে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই খুনের মূল চক্রী নবীন শর্মার সহযোগিতায় এই অপরাধ করা হয়েছিল। নবীন অস্ত্র পাওয়ার জন্য লেডি ডনকে অগ্রিম দেড় লাখ টাকা দিয়েছিল। বাকি অর্থ দেওয়া হয় হত্যার পর। উল্লেখ্য, নবীনকে আগেই গ্রেফতার করেছে নয়ডা পুলিশ। নয়ডা পুলিশের অতিরিক্ত ডিসিপি মনীশ কুমার মিশ্র বলেছেন, ‘আমরা গ্যাংস্টার আইনের অধীনে কাজলের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তদন্তে আরও বেশ কিছু নাম উঠে এসেছে। জড়িত সবাইকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কাজল জানিয়েছে যে বর্তমানে জেলে থাকা কুখ্যাত গ্যাংস্টার কপিল মানকে বিয়ে করেছেন তিনি। দুজনের দেখা হয়েছিল দিল্লির রোহিনীর সেক্টর ১১-এর একটি জিমে। এরপর ২০১৯ সালে বিয়ে করেছিলেন তারা। তারপর থেকে কাজল কপিলের বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ, গ্যাংকে আর্থিক এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদান করে আসছে।
পুলিশ জানায়, সুরজ মান হত্যার কিছুদিন আগে জেলে কপিল মানের সঙ্গে কাজল দেখা করেছিল। সেখানে হত্যার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। উল্লেখ্য, গত বছর সুরজ মান নয়ডার একটি জিম থেকে বেরিয়ে আসার পরে তাঁকে পরপর গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। মোটর বাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা তার ওপর হামলা চালায়।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, সুরজ মানের কোনও অপরাধমূলক ইতিহাস ছিল না। তবে সন্দেহ করা হয়েছিল যে তাঁর জেলে থাকা ভাই গ্যাংস্টার পারভেশ মানকে আর্থিক সহায়তার কারণেই তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল। কপিলের নির্দেশে কাজ করছিলেন কাজল। কয়েক বছর ধরেই কপিল ও পারভেশের মধ্যে বিবাদ চলছে। পারভেশ বর্তমানে মান্ডোলি জেলে বন্দি। তার বিরুদ্ধে কপিলের বাবাকে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগ রয়েছে। কপিল প্রতিশোধ হিসেবে পারভেশের ভাই সুরজ মানকে খুন করার নির্দেশ দিয়েছিল।