দিল্লির যন্তর মন্তরে বিগত বেশ কয়েকদিন ধরে ধরনায় বসেছিলেন দেশের তাবড় তাবড় কুস্তিগীররা। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশন তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেফতারির দাবিতেই এই আন্দোলনে নেমেছিলেন ক্রীড়াবিদরা। বজর পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাটদের অভিযোগ ছিল, ব্রিজ ভূষণ যৌন হেনস্থা করেছেন দেশের উঠতি কুস্তিগীরদের। পাশাপাশি মানসিক ভাবে ক্রীড়াবিদদের অত্যাচারও করেছেন ব্রিজ ভূষণ। এই আবহে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানিয়েছিলেন ভিনেশরা। মামলাকারী সাত মহিলা কুস্তিগীরদের মধ্যে ছিলেন এক নাবালিকাও। এই মামলার শুনানি চলাকালীন আজ দিল্লি পুলিশ জানিয়ে দিল যে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে এফআইআর করবে তারা।
এর আগে ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার তদন্তের জন্য মেরি কমের মেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছিলেন কুস্তিগিররা। এরই মাঝে কুস্তিগিরদের অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ ব্রিজ ভূষণের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ গ্রহণ করছে না। এই আবহে যন্তর মন্তরে ধরনায় বসেন তাঁরা। বিষয়টির রাজনৈতিক মোড় নেয়। হরিয়ানা খাপ পঞ্চায়েত নেতারা যোগ দেন প্রতিবাদে। কংগ্রেসও এই প্রতিবাদে সামিল হয়। এদিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে অভিযোগ করার জন্য সময় চেয়েছেন কুস্তিগীররা। তবে শাসক দলের সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ বা আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনও ইঙ্গিত দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। তবে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে দিল্লি পুলিশ আজ জানাল, তারা ব্রিজ ভূষের বিরুদ্ধে এফআইআর গ্রহণ করবে।
এদিকে আজকেই দুপুরে আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে টুইট করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট বার্তায় মমতা লেখেন, ‘আমাদের সকলরই প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। তাঁরা সবাই সরব হয়েছেন। আমাদের ক্রীড়াবিদরা আমাদের দেশের গর্ব। তাঁরা চ্যাম্পিয়ন। রাজনৈতিক যোগ নির্বিশেষে দোষীদের আইনের আওতায় শাস্তি দিতে হবে। ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দিতে হবে। সত্যের জয় হবেই।’ এই ইস্যুতে আগেই সরব হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। এদিকে কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, শিবসেনা (উদ্ধবপন্থী) সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীও কুস্তিগীরদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সহমর্মিতা জানিয়েছিলেন অলিম্পিকে সোনাজয়ী জ্যাভেলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়া এবং ক্রিকেট বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক কপিল দেবও।