১৯৯৭ সালে দিল্লির তুঘলকাবাদে খুন হয়েছিলেন কিষাণ লাল। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন রামু নামক এক দিনমজুর। তবে ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছিল রামু। রামুর কোনও ছবি পুলিশি রেকর্ডে ছিল না। রামুকে চিনতেন মৃত কিষাণের স্ত্রী সুনীতা। সেই মামলার কিনারা করতে পুলিশ রিক্সা এজেন্টের বেশ ধারণ করে। আর তাতেই ২৫ বছর পর অসাধ্য সাধন। আড়াই দশক থেকে যে মামলার কিনারা হয়নি। মাত্র একবছরে সেই মামলার তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীকে গ্রেফতার করলেন চার পুলিশকর্মীর এখ দল।
পুরোনো মামলার কিনারা করার জন্য উত্তর দিল্লি পুলিশের তরফে চার সদস্যের একটি দল গঠন করা হয়। সেই দলে আছেন - সাব-ইন্সপেক্টর যোগেন্দ্র সিং, হেড-কনস্টেবল পুনীত মালিক এবং ওমপ্রকাশ ডাগর ইন্সপেক্টর সুরেন্ডার সিং। সহকারী পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) ধর্মেন্দ্র কুমার তাঁদের ‘গাইড’। এই দল ২০২১ সালে কিষাণের মৃত্যু মামলার ফাইল হাতে তোলে। তখন তাদের কাছে রামু সম্পর্কে কোনও তথ্যই ছিল না।
জানা গিয়েছে, দিল্লির উত্তমনগরে রামুর কয়েকজন আত্মীয় ছিলেন। তাদের কাছে বিমা এজেন্ট বেশে গিয়েছিলেন পুলিশকর্মীরা। টাকা দিয়ে সাহায্য করার নাম করে তারা কিছু তথ্য আদায় করেন। এরপরে উত্তরপ্রদেশের ফারাক্কাবাদ জেলার খানপুর গ্রামে পৌঁছান তদন্তকারীরা। সেখানেও নিজেদের বিমা এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে রামুর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তদন্তকারীরা। সেখানে রামুর ছেলে আকাশের ফোন নম্বর জোগাড় করেন তারা। এরপর আকাশকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে রামু বর্তমানে লখনউতে ই-রিক্সা চালায়। সে ‘অশোক যাদব’ নাম ভাড়িয়েছে। এরপর ই-রিক্সার এজেন্ট সেজে লখনউতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ভর্তুকি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বহু রিক্সাচালকের সঙ্গে কথা বলেন তারা। এরপর গত ১৪ সেপ্টেম্বর রামু ওরফে অশোক যাদবকে গ্রেফতার করে। প্রথমে ধৃত ব্যক্তি দাবি করে সে রামু নয় এবং দিল্লিতে কোনওদিন সে থাকেনি। পরে মৃত কিষাণের স্ত্রী এবং রামুর আত্মীয়রা তাঁকে চিহ্নিত করে। এরপর জেরার মুখে রামু স্বীকার করে, টাকার লোভে সে কিষাণকে খুন করেছিল।