আগেরদিনই আগুন জ্বলেছে উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে। ছড়িয়ে পড়েছে হিংসা। আর দ্বিতীয় দিনেই (গত ২৫ ফেব্রুয়ারি) হোয়াটসঅ্যাপে একটি গ্রুপ তৈরি করলেন কয়েকজন যুবক। নাম 'কট্টর হিন্দু একতা'। সেই গ্রুপে সকল হিন্দু বাসিন্দাদের মুসলিম মানুষের উপর হামলা চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। মঙ্গলবার দিল্লির একটি আদালতে দাখিল করা পুলিশের চার্জশিটে একথাই জানানো হয়েছে।
হামজা নামে একটি ব্যক্তির খুনের ঘটনায় গোকুলপুরী থানায় দায়ের এএফআইআরের (এফআইআর নম্বর ১০২/২০) সাপেক্ষে এই চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। গত ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি ভাগীরথী ড্রেনে উদ্ধার হওয়া ন'জন মুসলিম যুবকের মধ্য়ে অন্যতম ছিলেন হামজা। সেই ঘটনায় লোকেশ সোলাঙ্কি, পঙ্কজ শর্মা, সুমিত চৌধুরী, অঙ্কিত চৌধুরী, প্রিন্স, যতীন শর্মা, ঋষভ চৌধুরী, বিবেক পাঞ্চাল এবং হিমাংশু ঠাকুরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা সবাই এখন জেলে রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে গ্রুপে ১২৫ জন সদস্য ছিল এবং সেই গ্রুপের অ্য়াডমিন বাকি দাঙ্গাবাজদের জড়ো করে। চার্জশিট অনুযায়ী, ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টা ৩৯ মিনিটে সোলাঙ্কি একটি পোস্ট করে। দাবি করে, সে এবং তার 'দল' গঙ্গা বিহার দিয়ে যেতে পারে এবং তাদের কাছে অস্ত্র-গোলাগুলি রয়েছে। ভাগীরথী বিহারের পাশেই অবস্থিত গঙ্গা বিহার। পাঁচ মিনিট পরে আরও একটি মেসেজে সোলাঙ্কি দাবি করে, তারা দু'জন মুসলিমকে খুন করে নালায় দেহ ফেলে দিয়েছে। সবমিলিয়ে ন'জম মুসলিমকে খুন করেছিল ওই দলটি।
চার্জশিটে জানানো হয়েছে, ওই দলটি লোকজনের রাস্তা আটকাচ্ছিল। নাম, ঠিকানা এবং পরিচয়পত্র দেখে তাঁদের ধর্ম বিচার করা হচ্ছিল। অনেকবার তাঁদের 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান দিতে বাধ্য করা হচ্ছিল। যাঁদের মুসলিম নাম ছিল এবং যাঁরা 'জয় শ্রীরাম' বলতে অস্বীকার করছিল, তাঁদের উপর হামলা চালানো হচ্ছিল এবং খুন করে ভাগীরথী বিহার ড্রেনে ফেলে দেওয়া হচ্ছিল।
দিল্লি পুলিশের সেই চার্জশিট এখনও গ্রহণ করেনি আদালত এবং ধৃতেরাও কোনও সওয়াল করেনি। আদালত চার্জশিট গ্রহণের পর অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আদালতে সওয়াল করবেন।