দিল্লিতে IAS কোচিং সেন্টারে পড়ুয়াদের মৃত্যুর জন্যে কি দায়ী সেই গাড়ি চালক? জলমগ্ন রাস্তায় চালিয়ে যাওয়া এসইউভি গাড়ির ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই এই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুলিশ ইতিমধ্যেই সেই গাড়ির চালককে গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম মনোজ কঠুরিয়া। উল্লেখ্য, এই মনোজ রাউ'স স্টাডি সার্কেলের পাশ দিয়ে নিজের এসইউভি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই সময়ই গাড়ির জন্যে রাস্তার জমে থাকা জলে ঢেউ ওঠে এবং সেই ঢেউতেই ভেঙে গিয়েছিল আইএএস কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টের দরজা। আর তারপরই হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছিল সেই বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে। (আরও পড়ুন: নতুন চেয়ারপার্সন পাচ্ছে UPSC, 'কাঁটায় ভরা চেয়ারে' বসছেন IAS অফিসার প্রীতি সুদান)
আরও পড়ুন: জয় শাহদের কড়া পদক্ষেপ, BCCI-কে ১৫৯ কোটির বকেয়া মেটাতে বোঝাপড়ায় বাইজুস
এই আবহে মনোজকে আদালতে পেশ করা হয়েছিল মঙ্গলবার। সেই সময় মনোজ জামিনের আবেদন করেন। তবে সরকার পক্ষের আইনজীবী সেই আবেদনের বিরোধিতা করে অভিযোগ করেন, মনোজ একজন 'মস্তিখোর'। মনোজের সোশ্যাল মিডিয়ার একাধিক ভিডিয়ো তুলে ধরে সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, মজা করতে করতেই এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছেন মনোজ। পাশাপাশি তিনি আরও দাবি করেন, এই মামলায় এখনও তদন্ত চলছে। এই আবহে মনোজ জামিন দিলে তিনি সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারেন। (আরও পড়ুন: অ্যাকাউন্ট গড়ের মাঠ! গ্রাহকদের থেকে ৮৫০০ কোটি টাকা 'কেটেছে' সরকারি ব্যাঙ্কগুলি)
আরও পড়ুন: ITR ফাইলের ডেডলাইন বদলাচ্ছে? জানাল আয়কর দফতর, একনজরে রিটার্ন জমার পূর্ণাঙ্গ গাইড
এদিকে এই পরিপ্রেক্ষিতে মনোজের পালটা যুক্তি, তাঁকে বেইআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির সময় এফআইআর-এর কপি তাঁকে দেওয়া হয়নি। এছাড়া এই মৃত্যু ঘটানোর ক্ষেত্রে তাঁর কোনও অভিপ্রায় বা উদ্দেশ্য ছিল না। মনোজের কথায়, 'রাস্তা খোলা ছিল। ৩০ ফুটের রাস্তা ছিল। জল জমে ছিল আড়াই ফুট পর্যন্ত। আমার গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় মাত্র ১৫ কিমি। মিডিয়া এবং বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের শান্ত করতে সাধারণ মানুষদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনও সরকারি আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়নি এই ঘটনায়। আমি কী করেই বা জানব যে সেখানে বেসমেন্টে পড়ুয়ারা থাকবেন? আর আমাক আগে আরও সব গাড়ি গিয়েছে। আমার পরও তো অনেক গাড়ি সেখান দিয়ে গিয়েছে। এখানে গলদ যদি কারও থাকে সেটা সরকার এবং ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষের। দিল্লি জল বোর্ডের কোনও আধিকারিক কেন গ্রেফতার হবেন না এই ঘটনায়?' এই যুক্তি তর্ক শোনার পরে আদালত লিখিত আকারে জামিনের আবেদন করতে বলে ধৃত মনোজকে।
আরও পড়ুন: হামাস নেতার সঙ্গে ইরানে একই ফ্রেমে গডকরি! ইসমাইল হানিয়ার হত্যার পর সামনে এল ছবি
উল্লেখ্য, কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টের দরজা ভেঙে একসঙ্গে প্রচুর জল ভরে গিয়েছিল বিল্ডিংয়ের বেসমেন্টে। গত ২৭ জুলাই দুর্ঘটনার দিন রাউ'স স্টাডি সার্কেলে যখন এই দুর্ঘটনা ঘটে, তখন বেসমেন্টে মোট ৩০ জন ছিলেন। তাঁদের মধ্যে থেকে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছিল। আগেই ১৪ জন নিজেরা সেখান থেকে নিরাপদ জায়গায় যেতে সমর্থ হয়েছিলেন। আর তিন পড়ুয়ার মৃতদেহ পরে উদ্ধার করা হয়। এই আবহে একটি ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে, কোচিং সেন্টারের বাইরে জলমগ্ন রাস্তায় জলের স্রোত ভেঙে দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে একটি গাড়ি। সেই গাড়ির জেরে ঢেউ গিয়ে আছড়ে পড়ছে কোচিং সেন্টারে। অনেকেই দাবি করছে, সেই গাড়িটি দ্রুত গতিতে যাওয়ায় যে জল কোচিং সেন্টারের দরজায় আছড়ে পড়েছিল, তার জেরেই দরজা ভেঙে জল ঢুকেছিল বেসমেন্টে।