শুধু অক্সিজেন বা করোনা টিকা নয়। এবার অভাব কাঠেরও। করোনায় মৃত্যুর সঙ্গে বেড়েছে শেষকৃত্যের কাঠের চাহিদা। পরিস্থিতি এমনই যে শেষমেশ বন দফতরের সাহায্য চাইল দিল্লি পৌরসভা।
দিল্লি পৌরসভাচালিত শ্মশানে দাহের কাঠের আকাল দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব দিল্লির পৌরসভা কর্তৃপক্ষ বন দফতরের সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন। অন্যদিকে পূর্ব দিল্লি পৌরসভা পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষকৃত্যের কাজে ঘুঁটে ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে। প্রসঙ্গত, তিনটি মিউনিসিপাল কর্পোরেশনই বিজেপিচালিত।
পৌরসভার কয়েকজন আধিকারিক এ বিষয়ে আলোকপাত করেন। তাঁরা জানান, শ্মশানগুলি কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে লিজ দেওয়া। তারাই সরকারি সরবরাহকারীদের থেকে কাঠ জোগাড় করে।
আধিকারিকদের কথায়, 'করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে দিল্লির বৃহত্তম শ্মশান নিগমবোধ ঘাটে দিনে ৬ হাজার থেকে ৮ হাজার কেজি কাঠ লাগত। এখন সেই চাহিদা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার কিলো।'
ফলে স্বাভাবিকভাবেই এই বিপুল চাহিদার জোগান দিতে হিমসিম খাচ্ছে সরকারি সরবরাহকারীরা।
শুধু তাই নয়। দ্রুত শেষকৃত্য সম্পন্ন করার জন্য খোলা হয়েছে একাধিক অস্থায়ী শ্মশানও। উত্তর দিল্লি পৌরসভার মেয়র জয় প্রকাশ জানান, পার্কিং লট, পার্ক ইত্যাদি স্থানেও অস্থায়ী শ্মশান তৈরী করা হয়েছে। ফলে কাঠের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে। 'এ বিষয়ে আমরা দিল্লি সরকারের সহযোগিতা কামনা করি,' বলেন তিনি।
দিল্লির বন দফতের কাছে কাঠ সরবরাহের আর্জি করেছে পৌরসভাগুলি। দিল্লি বন দফতরের উত্তর শাখার বন আধিকারিক আদিত্য মদনপুত্র জানান, এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাদধানী এলাকায় রাস্তা তৈরীর জন্য ৫০০ টি গাছের উপর ও পাশের ডাল কাটার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেগুলিই আপাতত শ্মশানগুলিকে সরবরাহ করা হবে।
অন্যদিকে বন দফতরের দক্ষিণ শাখাও ২০০টি মৃত গাছ কেটে ফেলার অনুমোদন দিয়েছে।
পশ্চিম বিহার শ্মশানের এক কর্মীর কথায়, 'এক একটি চিতায় প্রায় ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি কাঠ প্রয়োজন। এখন এতটাই টানাটানির পরিস্থিতি যে সেটা কমিয়ে ৪৫০ কেজি করে আনা হয়েছে।' তিনি জানান, দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টি দেহ আসছে। ফলে কতটা কাঠ লাগতে পারে, তা সহজেই অনুমানযোগ্য।
অন্যদিকে গত ২৫ এপ্রিল এ বিষয়ে পূর্ব দিল্লির পৌরসভা একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেখানে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, সাধারণ নাগরিকদের সংগঠন ও গরুর শেলটারগুলিকে গোবর সরবরাহের জন্য আর্জি করা হয়। কাঠের অভাব পূরণ করতে ঘুঁটে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া অন্যান্য রাজ্য থেকে যাতে কাঠ সরবরাহ করা যায়, সে বিষয়েও দিল্লি সরকারের কাছে আর্জি করেছে পৌরসভা।