‘অস্বাভাবিক যৌনতা’ প্রসঙ্গে ছত্তিশগড় হাইকোর্টের বিতর্কিত রায়ের পর বুধবার রাজ্যসভায় মুখ খুললেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদীয় দলের নেতা ডেরেক ও-ব্রায়েন।
তিনি গত সপ্তাহে ব্যক্তিগত সদস্যের একটি বিল উত্থাপন করে বলেন যে, “ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে যে ‘ব্যতিক্রমী’ বার্তা দেওয়া আছে তা অত্যন্ত আদিম একটি ধারণা পোষণ করে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে এটি মহিলাদের সাংবিধানিক অধিকারকে লঙ্ঘন করে। তাদের স্বাধিকার, সমতা ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা পাশ করার পূর্বে ও'ব্রায়েন সংসদীয় পর্যালোচনা কমিটির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন। তখন একটি ব্লগ পোস্টে তিনি বলেছিলেন, বিরোধী সদস্যরা এই ‘ব্যতিক্রমী’ আইনটির বিষয়ে প্যানেলে উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন - লোকপুর বিস্ফোরণে NIA আদালতে দোষী সাব্যস্ত তৃণমূল কর্মী বাবলু মণ্ডল
"ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ ধারার এই 'ব্যতিক্রমটি' বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে অত্যন্ত বিপজ্জনক একটি বার্তা দেয়। এটি কেবল নারী মর্যাদার অবমাননাই নয়, নিজের শরীরের প্রতিই নারীদের স্বাধীনতাকে কেড়ে নেয়।" - ও'ব্রায়েন বলেন।
তৃণমূল নেতা এই আইনটিকে ঘোর পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা ও ব্রিটিশ শাসনের একটি কুফল বলে অভিহিত করে বলেন, এই নিয়মটি পরিবর্তনের একাধিক সুপারিশ সত্ত্বেও উদাসীন কর্তৃপক্ষ। এই আইন প্রণয়নের আগে সংসদের একাধিক সদস্য যৌথভাবে এই ‘ব্যতিক্রম’ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।
"ব্যক্তিগত স্বাধীনতার ক্ষেত্রে নারীর যৌনতায় সম্মতি বা অসম্মতির অধিকার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আদালত যদি প্রজনন বিষয়ে মহিলাদের স্বাচ্ছন্দ্যের অধিকার দিয়ে থাকে তবে যৌনতা বিষয়ে কেন নয়! বিবাহের মধ্যে নারী সম্মতির অধিকারকে অস্বীকার, লিঙ্গ-বৈষম্য সংক্রান্ত জটিলতা ও হিংসাকে আরও প্রশ্রয় দেয়। এমন একটি মধ্যযুগীয় ধারাকে এখনও টিকিয়ে রাখা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা।" - তিনি বলেন।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৩ ধারা অনুসারে, "একজন পুরুষ তার স্ত্রীর ইচ্ছার অনুপস্থিতিতেও তার সঙ্গে যৌন মিলন বা যৌন ক্রিয়াকলাপে লিপ্ত হলে ( যদি স্ত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম না হয় ) তাকে ধর্ষণ বলা যাবে না।"
আরও পড়ুন - আশাকর্মীদের ফোন দেওয়ার জন্য ৩ বছর আগে টাকা দিয়েছিল কেন্দ্র, দাবি শুভেন্দুর
আইনের এই ধারাটিকে সংশোধনের প্রস্তাব করে ও'ব্রায়েন' বক্তব্য রেখেছেন যে, অভিযুক্ত ও অভিযোগকারীর বৈবাহিক সম্পর্ক যেন বিচারের অন্তিম নির্ণায়ক না হয়ে ওঠে।