নিউ মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরুর ৩০ ঘণ্টা পর নিউ মার্কেট এলাকায় যান চলাচল শুরু হয়েছে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশ পেলেই দোকান খোলা হবে৷
বুধবার সকাল থেকেই ওই এলাকায় নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত ও ঢাকা কলেজের সামনের সড়কে যান চলাচল শুরু হয়৷ সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষ শুরুর পর থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি থেকে নিউ মার্কেট পর্যন্ত রাস্তা ছিল কার্যত রণক্ষেত্র৷
ফের সংঘাত এড়াতে চন্দ্রিমা মার্কেট ও নুর ম্যানশন শপিং কমপ্লেক্সের সামনে সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা৷ সকালে ঢাকা কলেজের প্রধান ফটকে শিক্ষার্থীদের দেখা যায়নি৷
আরও পড়ুন: Kalboishakhi Jhor 2022: ঘণ্টায় ৭০ কিমি বেগে তাণ্ডব কালবৈশাখীর, শিলাবৃষ্টি হল ঢাকায়
সকালে যান চলাচল শুরুর পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় গাড়ির ভিড় বেড়েছে৷ দোকান মালিক ও কর্মচারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে মার্কেটগুলোর ফটকে অবস্থান করলেও নির্দেশ না পাওয়ায় দোকান খোলেননি৷ নীলক্ষেত মোড়ে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের সদস্য জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সকাল থেকে গাড়ি চলাচল করছে, পরে কী হবে জানি না৷’
এদিকে দোকান খোলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন দোকান মালিক সমিতির নেতারা৷ নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহীন আহমেদ ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘রাতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল ভাই (হেলাল উদ্দিন) আর আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম৷ তাঁকে বলেছি, আমাদের তো অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে ইদের সময়, যা হয়েছে হয়েছে, এখন থেকে দোকান খুলতে চাই৷ ‘মন্ত্রী বলেছেন, তিনি শিক্ষামন্ত্রী-সহ সবার সঙ্গে কথা বলবেন৷ এখানে অনেক পড়ুয়া আছেন, দোকানের কর্মচারী আছেন, আবার যাতে কোনও সংঘর্ষ না বাঁধে, সব বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷’
নিউ মার্কেটের নূর ম্যানশনের নিরাপত্তাকর্মী মো. বশির জানান, দোকান না খুললেও দোকানদাররা সবাই মার্কেটে চলে এসেছেন৷ অনেকে কলাপসিবল গেটে দাঁড়িয়ে আছেন৷
সোমবার সন্ধ্যায় নিউ মার্কেটের ৪ নম্বর গেটের কাছে দুই দোকানের কর্মচারীদের মধ্যে ঝামেলার জেরে রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধে যায়৷ সেই সংঘাত মঙ্গলবার সকাল থেকে সারাদিন চললে সাংবাদিক-সহ অর্ধশতাধিক আহত ও এক কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী মারা যান৷
এক দোকানে খেতে যাওয়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দোকানকর্মীদের তর্কাতর্কি থেকে ঘটনার সূত্রপাত হয় বলে প্রথমে ব্যবসায়ী ও পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়৷ যদিও পরে এক সিসিটিভি ফুটেজে ভিন্ন ঘটনার কথা উঠে আসে৷ নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি শাহীন আহমেদ মঙ্গলবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘দুই দোকানের রেষারেষি থেকে এই সংঘাতের সূত্রপাত বলে তিনি একটি সিসি ক্যামেরার ভিডিয়োয় দেখতে পেয়েছেন৷’
তবে তাঁর দাবি, মঙ্গলবার দিনভর যে সংঘর্ষ হল, তাতে দোকান মালিক বা কর্মচারীরা ছিলেন না৷ ‘হেলমেট পরা যারা রাস্তার মাঝের ব্যারিয়ার থেকে লোহার টুকরো ভাঙল, তারা কারা? তারা তো বহিরাগত৷’
আরও পড়ুন: যেন বিষাক্ত বায়ুর চেম্বার! পরপর ২ বার বিশ্বের সবথেকে দূষিত বায়ুর দেশ বাংলাদেশ
সংঘাত থামাতে এত দীর্ঘ সময় লাগায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘বেশি সময় লেগেছে এটা ঠিক৷ কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি ক্যাজুয়ালটি কমিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করতে৷ সেজন্যই সময় লেগেছে৷’
ময়লার স্তূপ সরানো হয়েছে
মঙ্গলবার সকালে সংঘর্ষের সময় নিউ মার্কেটের উত্তর-পূর্ব কোণের ৪ নম্বর ফটক ও দুই নম্বর ফটকের (বলাকা সিনেমার বিপরীতে) সামনে রাখা ময়লার স্তূপ সরানো হয়েছে৷ নিউ মার্কেটের দোকানকর্মীদের অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের জের ধরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সকালে ভ্যানে করে আবর্জনা এনে ফেলে রেখে যায়, যাতে দোকান না খুলতে পারে৷