বাংলাদেশের সুনামগঞ্জে হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে একদিন আগে। এর প্রতিবাদে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই রাতে বিশাল প্রতিবাদ মিছিল বের করেন পড়ুয়ারা। রিপোর্ট অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের ছাত্ররাই মূলত এই প্রতিবাদ মিছিলে সামিল ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা সংখ্যালঘু হিন্দু ছাত্ররাই এই হোস্টেলে বসবাস করেন। সেই মিছিল থেকেই স্লোগান ওঠে - 'সাম্প্রদায়িক বিভাজন, ভেঙে দাও জনগণ', 'সব ধর্মকে রক্ষা করো', 'সুনামগঞ্জে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব দাও', 'ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলবে না'। এদিকে সেই প্রতিবাদ মিছিলের বিভিন্ন ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে ইতিমধ্যেই। জানা গিয়েছে, মিছিল করে এই পড়ুয়ারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি-তে জমায়েত হন। সেখানেই ফের চলতে থাকে প্রতিবাদ বিক্ষোভ।
উল্লেখ্য, ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছিল সুনামগঞ্জে। এরপরই সেখানে দোয়ারাবাজার উপজেলায় বিভিন্ন হিন্দুদের বাড়িতে হামলা হয়। চলে লুটপাট। এদিকে ধর্মীয় অবমাননার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মংলারগাও গ্রামের বাসিন্দা আকাশ দাসকে (বয়স ২০ বছর)। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, আকাশ দাস নাকি অন্য এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টে গিয়ে ধর্মীয় অবমাননাকর কমেন্ট করেছিলেন। এই আবহে সুনামগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর চড়াও হয় সুযোগ সন্ধানী মৌলবাদীরা। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সুনামগঞ্জের লোকনাথ মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে যাতে অন্তত ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বাজারে থাকা হিন্দুদের শতাধিক দোকানে ভাঙচুর এবং লুটপাট করা হয়েছে। উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গুরু দে’র বাড়িতে হামলা চালানো হয়। সেই এলাকার ১০টি হিন্দু বাড়িতে লুটপাট চালানো হয়। মংলাগাঁওয়ের শতাধিক হিন্দু বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে। অনেকেই সেখান থেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে গিয়েছেন। এবং ননিগাঁও পূর্ব হাঁটিতেও বহু হিন্দু বাড়িতে লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ।
এছাড়াও মঙ্গলবার রাতে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার গাজিটেক গ্রামে হামলায় শ্রীশ্রী কালী মন্দিরটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল কাইয়ুম। সেখানে কালীমূর্তি ভাঙা হয়। তবে পুলিশের বক্তব্য, এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, ঘটনা ঘটে যাওয়ার অনেক পড়ে গভীর রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এদিকে মংলাগাঁওয়ে বাংলাদেশ সেনা নাকি অস্থায়ী ঘাঁটি তৈরি করে সেখানে আছে। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মহম্মদ ইলিয়াস মিয়াঁ বলেন, 'ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে আমরা সন্দেহ করছি। হিন্দুদের সম্পত্তিতে হামলার জন্য উস্কানি দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য যতটা ক্ষতির কথা বলা হচ্ছে ততটা হয়নি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা উপজেলার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছি। এলাকা এখন শান্ত।'