কখনও আমফান, কখনও ফনি - আবার সাম্প্রতিককালে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মুখোমুখি হতে হয়েছে ওড়িশাকে। প্রতি বছরই বিপর্যয় মোকাবিলা যেন এই উপকূলবর্তী রাজ্যের কাছে চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।পরবর্তী প্রজন্ম যাতে এই বিপর্যয় মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে সজাগ ও সচেতন হতে পারে, সেজন্য এবার পড়ুয়াদের পাঠ্যসূচিতে বিপর্যয় ও মহামারী মোকাবিলা সংক্রান্ত পাঠ দিতে চলেছে ওড়িশা সরকার।
গত শনিবার ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের নেতৃত্বে এই বিষয়ে একটি উচ্চপদস্থ বৈঠক হয়।সেই বৈঠকেই নতুন এই সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়েছে।এই প্রসঙ্গে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক জানান,‘পঞ্চম দফায় সরকার গড়ার আগে ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফনি মুখোমুখি হতে হয়েছিল আমাদের। গত দু'বছর ধরে এক টানা ঘূর্ণিঝড় ও করোনা মহামারী মোকাবিলা আমাদের করতে হচ্ছে। এই সংকটকালে সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে আমরা আমাদের সাধ্যমতো করছি।’ তিনি জানান, নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই বিপর্যয় সম্পর্কে যাতে আগে থেকেই সম্যক ধারণা থাকে এবং কীভাবে এই বিপর্যয় মোকাবিলা করতে হয়, সেই সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়, সেজন্য স্কুল, কলেজের পাঠ্যসূচিতে বিপর্যয় ও মহামারী মোকাবিলা পাঠ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওড়িশা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যরা জানান, আগে বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে ওড়িশাকে সকলে করুণা করত। এখন বিপর্যয় মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে গোটা বিশ্ব ওড়িশার প্রশংসা করে।
সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ওড়িশা উপকূলে বালেশ্বরের কাছে আছড়ে পড়ে। ঝড়ের দাপটে উপকূলবর্তী এলাকা তছনছ হয়ে যায়। তবে আগাম প্রস্তুতি থাকার ফলে ঘূর্ণিঝড়ে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হতে পারত, তার কিছুই হয়নি। গত ৩০ মাসে ওড়িশা ৬টি ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলা করেছে। ওড়িশার স্পেশাল রিলিফ কমিশনার পি কে জেনা জানিয়েছেন, 'যেভাবে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা নিয়ে প্রস্ততি নিয়েছিলাম, সেটাই আমাদের এই দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে পার্থক্য গড়ে দিয়েছে।'
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওড়িশা সরকার উপকূলবর্তী নীচু এলাকা থেকে প্রায় ৭ লাখ ১০ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর যেখানে ৫২টি দল কাজ করেছে, সেখানে ওড়িশা র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের তরফে ৬০টি দল, ২০৬টি দমকল বাহিনী কাজ করেছে।এছাড়াও ওড়িশা স্পেশাল সশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে ৫০টি দল কাজ করেছে। ওড়িশা সরকারের এই বিপর্যয় মোকাবিলা পদ্ধতিকে প্রশংসা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।