লকডাউনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য অত্যাবশকীয় খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করছে না পাকিস্তান সরকার। এমনই অভিযোগ করলেন সিন্ধবাসী হিন্দুরা।
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের বাসিন্দা সংখ্যালঘু হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জরুরি খাদ্যপণ্য সরবরাহ করছে না পাক সরকার। যদিও সংখ্যাগুরু মুসলিম সম্প্রদায় লকডাউনে সরকারি সাহায্যে খাদ্য সামগ্রীর নিয়মিত ভাগ পাচ্ছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন সংখ্যালঘুরা।
সিন্ধবাসী এক হিন্দু আক্ষেপ করে জানিয়েছেন, ‘লকডাউনে আমাদের কোনও রকম সাহায্য করছে না কর্তৃপক্ষ। সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে আমাদের নিয়মিত রেশনও দেওয়া হচ্ছে না।’
মঙ্গলবার করাচির রেহরি ঘোঠ অঞ্চলে খাদ্য সামগ্রী পাওয়ার আশায় জড়ো হয়েছিলেন সংখ্যালঘুদের একাংশ। কিন্তু বেশিরভাগ দোকান বন্ধ থাকায় তাঁদের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। করাচির আর এক হিন্দু ব্যক্তি জানিয়েছেন, ‘শুধু শুনতে পাচ্ছি, আমাদের এলাকায় খাদ্য সামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বণ্টন করা হচ্ছে। আমার ছেলে রিকশা চালায়। কিন্তু লকডাউনের কারণে সব পরিষেবা এখন বন্ধ। কাজ না থাকায় ও ঘরে বসে রয়েছে। আমাদের কোনও খাবার নেই। টাকাও নেই। রেশন দফতরে গেলে বলা হয়, আলাদা ট্রাকে আমাদের জন্য খাদ্যদ্রব্য পাঠানো হবে, কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয়নি।’
পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৪ শতাংশ হিন্দু। অভিযোগ, তাঁদের ন্যূনতম মানবাধিকার থেকেও বঞ্চিত করে পাক প্রশাসন। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০১৯ সালে ৪০০টি হিন্দু মন্দির সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলল ইমরান খানের সরকার। তবে এখনও পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা দিনের আলো দেখেনি।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে লকডাউনেও সেই বৈষম্যের ধারা অটুট রয়েছে পাকিস্তানে। লকডাউন ঘোষণা করার পরে সিন্ধ প্রশাসন দিনমজুর ও শ্রমিকদের নিয়মিত খাদ্যপণ্য সরবরাহের ঘোষণা করেছিল। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি।
শুধু হিন্দুরাই নন, করাচির এ খ্রিস্টান পরিবারের সদস্য জানিয়েছেন, ‘লকডাউনের দ্বিতীয় সপ্তাহ চলছে এবং আমাদের ঘরে খাবার নেই। মন্ত্রীরা শুধু ভোট চাইতে আমাদের কাছে আসেন। লকডাউনে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় আমাদের হাতে অর্থও নেই। আমাদের সমস্যা জানতে এখনও পর্যন্ত কেউ আসেননি।’
পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায়ে দুর্দশা দেখে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন পাকিস্তানের বিরোধী নেতা আমজাদ আয়ুব মির্জা। রাজস্থান সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে হিন্দুদের জন্য ত্রাণ পাঠানোর আর্জি জানিয়েছেন মির্জা।