মেটা যে ফ্যাক্ট-চেকিং বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার তুমুল সমালোচনা করলেন বিশেষজ্ঞরা। মঙ্গলবার ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামের মূল সংস্থা মেটার তরফে ঘোষণা করা হয়েছে যে ফ্যাক্ট-চেকিং কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। যে কাজটা তৃতীয় কোনও পক্ষ করত। আপাতত শুধুমাত্র আমেরিকায় সেই কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা। পরিবর্তে ইলন মাস্কের মালিকাধীন এক্সের ধাঁচে 'কমিউনিটি নোট' যুক্ত করা হবে বলে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।
মাস্কের মডেল অনুকরণ জুকারবার্গের!
মেটার চিফ গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার জোয়েল কাপলান জানিয়েছেন, 'এক্স' যেমন 'কমিউনিটি নোট' মডেল ব্যবহার করে থাকে, সেরকমই করবে জুকারবার্গের সংস্থা। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা থ্রেডের কোনও পোস্টকে যদি বিভ্রান্তিকর বলে মনে করা হয়, তাতে সেই 'কমিউনিটি নোট' যুক্ত করে দেওয়া হবে।
তথ্য যাচাইকারীরা পক্ষপাতিত্ব করতেন, স্বীকার জুকারবার্গের
সেইসঙ্গে মেটার তরফে জানানো হয়েছে, 'কমিউনিটি নোট' মডেল চালু করার নেপথ্যে আছে তৃতীয় পক্ষের তথ্য যাচাইকারীদের পক্ষপাতিত্ব। তৃতীয় পক্ষের যাঁরা ফ্যাক্টচেক বা তথ্য যাচাই করে থাকেন, তাঁদের নিজস্ব পক্ষপাতিত্ব আছে। আর সেটার কারণে প্রচুর পোস্টের ফ্যাক্ট-চেকিং করা হত। ভুল হত প্রচুর। তাই সেই পুরনো মডেল থেকে সরে এসে আরও কয়েকটি ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ তোলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে মেটার তরফে জানানো হয়েছে।
ট্রাম্পকে খুশি করতে পদক্ষেপ জুকারবার্গের?
যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার আগে তাঁর মন জিততেই জুকারবার্গ সুর বদল করে নিলেন। মার্কিন রাজনীতিতে ফ্যাক্ট-চেকিংয়ের বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তর্ক-বিতর্ক চলছে। ডানপন্থীদের দাবি, বাকস্বাধীনতা খর্ব করতে এবং তাঁদের উপরে রাশ টানতে ফ্যাক্ট-চেকিংকে ব্যবহার করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরেই একই সুরে অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প এবং তাঁর 'বন্ধু' মাস্ক। সেই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প দায়িত্বভার গ্রহণের আগেই মাস্কের পথেই জুকারবার্গ হাঁটলেন। যে জুকারবার্গ ট্রাম্পের খুব একটা নেকনজরে ছিলেন না মনে করে সংশ্লিষ্ট মহল। আর জুকারবার্গ সেই সুর বদল করতেই মেটার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ট্রাম্পের ‘বন্ধু’ মাস্ক।
টয়লেটে জল চুঁইয়ে পড়লে…., সমালোচনা বিশেষজ্ঞদের
যদিও মেটার সেই সিদ্ধান্তের তুমুল সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের মাইকেল ওয়েগনার বলেছেন, 'যদি আপনার টয়লেট থেকে জল চুঁইয়ে পড়ে, তাহলে সেটা বন্ধ করার জন্য আপনি যে কারও উপরে নির্ভর করবেন না। কিন্তু নিজেদের প্ল্যাটফর্মে যে ভুয়ো তথ্য ছড়াচ্ছে, তা থামাতে মেটা এখন যে কারও উপরে নির্ভর করতে চাইছে।'