বেশ কয়েক বছর আগেই বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে দেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে বেসরকারি হাতে তুলে দিয়ে কোষাগার ভরানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে গত পাঁচবছর ধরে নিজেদের লক্ষ্যে একবারও পৌঁছাতে সক্ষম হয়নি কেন্দ্র। ২০২৩ সালেও সেই লক্ষ্য কয়েক কোটি হস্ত দূরেই থেকে যায় সরকার। আবার এই লোকসভা ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে সক্ষম হয়নি কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের অধীনে থাকা প্রায় ২০০ সংস্থার বিলগ্নীকরণের পথে না হেঁটে সেগুলিকে আরও লাভজনক করে তোলার দিকে সরকার ঝুঁকতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে ইকোনমিক টাইমসের রিপোর্টে। তবে এই সব সরকারি সংস্থার অধীনে থাকা অব্যহৃত জমি এবং সম্পত্তি বিক্রি করে নিজেদের পকেটে কিছুটা টাকা ভরার পরিকল্পনা করতে পারে অর্থ মন্ত্রক। যদিও সেই সংক্রান্ত নীতি এখনও নির্ধারণ করা হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে রিপোর্টে। (আরও পড়ুন: সময়ের আগে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছবে ভারত, দাবি নীতি আয়োগের)
আরও পড়ুন: ফের এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ডিএ বাড়ল, এবার ১৬%, বর্ধিত ভাতা কার্যকর কবে থেকে
প্রসঙ্গত, রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে ৫১ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে তোলার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র। তবে সেই লক্ষ্য থেকে অনেকটাই দূরে থেকে যায় সরকার। এই আবহে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা ৩০ হাজার কোটি স্থির করা হয়। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে আশা করা হচ্ছিল, সরকারি মালিকানাধীন এনএমডিসি স্টিল এবং আইডিবিআই ব্যাঙ্ককে বেসরকারি খাতে তুলে দিয়ে ৫১ হাজার কোটি টাকা কোষাগারে ভরার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবে আপাতত আইডিবিআই ব্যাঙ্কের বিলগ্নীকরণের প্রক্রিয়া সেই অর্থে এগোয়নি। এদিকে বিভিন্ন নির্বাচনের জেরে এনএমডিসি স্টিলের বিলগ্নীকরণও থমকে গিয়েছিল। এছাড়াও সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্কের বিলগ্নীকরণেরও পরিকল্পনা নিয়েছিল সরকার। তবে সেটাও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। এদিকে আপাতত হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রদানকারী পবন হংসের বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছে সরকার। (আরও পড়ুন: হাজিরা নিয়ে কড়াকড়ির মাঝে এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্যে বাড়তি ছুটির ঘোষণা)
আরও পড়ুন: শনির ফাঁড়া থেকে রক্ষা করছেন শনিদেব? ৪০ দিনে ৭ শনিবার সাপের ছোঁবল,তাও বেঁচে যুবক
তবে ছোটখাটো সংস্থার বিলগ্নীকরণের মাধ্যমে সরকার গত অর্থবর্ষে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা পকেটে ভরতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করা হয় রিপোর্টে। যদিও নির্ধারিত লক্ষ্যের আর্ধেকেরও কম এই পরিমাণ। এদিকে শুধু গতবছর নয়, বিগত পাঁচবছর ধরে টানা এই বিলগ্নীকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে মোদী সরকার। তবে বিশেষ করে গত অর্থবর্ষে বিলগ্নীকরণ বা বেসরকারিকরণ ধীর গতিতে চলছে রাজনৈতিক কারণে।
আরও পড়ুন: ফিরহাদের 'অনুরোধ', পুরসভার অধিবেশনে হিন্দিভাষী বিজেপি কাউন্সিলর বললেন বাংলায়
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯-২০ সালে বেসরকারিকরণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার কোটি, আর সরকারের পকেটে ঢোকে ৫০ হাজার কোটি। এরপর ২০২০ সালে লক্ষ্য ছিল ২ লাখ ১০ হাজার কোটি, আর পূরণ হয় প্রায় ৩৩ হাজার কোটি। ২০২১ সালে লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার কোটি, আর সরকারের পকেটে ঢোকে ১৫ হাজার কোটি। ২০২২ সালে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৫ হাজার কোটি, পকেটে ঢোকে ৩১ হাজার কোটি।