কর্ণাটকে বিপুল জয় পেয়েও চরম অস্বস্তিতে কংগ্রেস। আগামী বৃহস্পতিবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের ঘোষণা করা হয়েছে। তবে আগামী মুখ্যমন্ত্রীর নামই এখনও ঘোষণা করতে পারেনি কংগ্রেস। এই আবহে গতপরশু রাতে সকল জয়ী বিধায়কদের মত নেওয়া হয়েছিল গোপন ব্যালটে। এরপর সোমবারই দুই হেভিওয়েট - সিদ্দারামাইয়া এবং ডিকে শিবকুমারকে ডাকা হয়েছিল দিল্লিতে। সিদ্দারামাই সেই তলবে সাড়া দিয়ে রাজধানীতে চলে গিয়েছিলেন সোমবারই। তবে শরীর খারাপ এবং জন্মদিনের অজুহাতে বেঙ্গালুরুতেই থেকে গিয়েছিলেন শিবকুমার। কর্ণাটকে বসেই সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তবে অবশেষে আজ দিল্লির উদ্দেশে শিবকুমার রওনা দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরেই শিবকুমার পৌঁছতে পারেন দিল্লিতে। তার আগে তাঁর বার্তা, 'আমি পিঠে ছুরিকাঘাত করব না'। উল্লেখ্য, ৮ বারের বিধায়ক শিবকুমার ২৭ বছর বয়সে প্রথম বিধানসভা পা রেখেছিলেন। তিনি চিরকালই কংগ্রেসে থেকেছেন। গান্ধীদের প্রতি অনুগত থেকেছেন। ২০১৯ সালে কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকার ভাঙার পর রাজ্যে কংগ্রেসকে নতুন করে গড়ে তুলেছেন তিনি। এবারের নির্বাচনে নিজের আসন থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন তিনি। এদিকে তিনি নিজে ভোক্কালিগা সম্প্দায়ের। এবং এবারের নির্বাচনে কর্ণাটকের ভোক্কালিগা অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে বেশ ভালো ফল করেছে কংগ্রেস। এই সম্প্রদায় রাজ্যের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ। এতদিন ভোক্কালিগাদের মধ্যে জেডিএস-এর প্রভাব বেশি ছিল। তবে এবারের ভোটে দেখা যায়, কংগ্রেস সেই ভোটে থাবা বসিয়েছে। এই সব ফ্যাক্টরের প্রেক্ষিতেই শিবকুমার বারংবার বলে আসছেন, তিনি অনুগত থেকেছেন। এবার তাঁর পুরস্কৃত হওয়ার পালা। এর আগে ভোটের ফল প্রকাশের দিনও তিনি সোনিয়া গান্ধীর নাম নিয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন। তিনি বারবার মনে করিয়েছেন, কীভাবে ইডি, সিবিআই লাগিয়ে তাঁকে হেনস্থা করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। কিন্তু তিনি কংগ্রেসে থেকে লড়াই করেছেন।
এদিকে শিবকুমারের আনুগত্য নিয়ে যেখানে কোনও প্রশ্ন নেই, সেখানে সিদ্দারামাইয়ার ক্ষেত্রে সেই বিষয়টি খাটে না। জেডিএস এবং কংগ্রেসের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন সিদ্দারামাইয়া। ৯ বারের এই বিধায়কের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে রাজ্যে। এমনকী দাবি করা হচ্ছে, বিধায়কদের গোপন ব্যালটের ফল তাঁর দিকেই ঝুঁকে। এদিকে শিবকুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করলে ইডি, সিবিআই-এর তদন্ত কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। এই আবহে শেষ পর্যন্ত শিবকুমার গদিতে বসতে পারেন কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে নিজের বাসভবন থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের শিবকুমার বলেন, 'কংগ্রেস দলের সাধারণ সম্পাদক আমাকে একা আসতে নির্দেশ দিয়েছেন, আমি একাই দিল্লি যাচ্ছি। আমার শরীর এখন ভালো আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের সংখ্যা ১৩৫। আমি এখানে কাউকে ভাগ করতে চাই না। তারা আমাকে পছন্দ করুক বা না করুক, আমি সবার সঙ্গে আছি। আমি একজন দায়িত্বশীল মানুষ। আমি পিঠে ছুরিকাঘাত করব না, আমি ব্ল্যাকমেইল করব না।'