বোতল পিছু ২০ টাকা বাড়তি! এই হিসাবেই ক্রেতাদের লুটছিলেন এক মদ ব্যবসায়ী। আর সেটা করতে গিয়েই শেষমেশ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হল তাঁকে। সৌজন্যে স্থানীয় জেলাশাসক। ক্রেতা সেজে হাতেনাতে ব্যবসায়ীর চুরি ধরে ফেলেন তিনি। উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনের এই ঘটনা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মদ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে বাড়তি রোজগারের অভিযোগ নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি প্রত্যেকটি মদের বোতলে এমআরপি অর্থাৎ, খুচরো বিক্রির জন্য নির্ধারিত সর্বোচ্চ দামের থেকেও অতিরিক্ত ২০ টাকা আদায় করছিলেন ক্রেতাদের কাছ থেকে। যেটা আইনত তিনি করতে পারেন না।
এই বিষয়টি জেলাশাসকের কানেও পৌঁছেছিল। তারপরই তিনি স্থির করেন নিজে যাবেন ওই দোকানে, নিজেই যাচাই করে দেখবেন, আদৌ এই অভিযোগ সত্যি কিনা।
সেই মতোই হঠাৎ ওল্ড মুসৌরি রোডের ওই মদের দোকানে গিয়ে হাজির হন জেলাশাসক। কিন্তু, সেখানে পৌঁছেই প্রথমে নিজের পরিচয় দেননি তিনি। বরং ক্রেতা সেজে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করেন।
বাকি খদ্দেরদের সঙ্গে কথা বলে জেলাশাসক জানতে পারেন, তাঁরা প্রত্যেকেই বোতল পিছু অতিরিক্ত ২০ টাকা দিয়ে এই দোকান থেকে মদ কেনেন। এরপরও জেলাশাসকও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন।
কাউন্টারে পৌঁছানোর পর নির্দিষ্ট একটি ব্র্য়ান্ডের মদ কিনতে চান জেলাশাসক। যার সর্বোচ্চ দাম ৬৬০ টাকা। কিন্তু, দোকানদার চেয়ে বসে ৬৮০ টাকা। কেন বাড়তি টাকা চাওয়া হচ্ছে ,সেই প্রশ্ন করেন জেলাশাসক। কিন্তু, এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পাননি তিনি।
এর পরই স্বমহিমা দেখান ওই সরকারি আধিকারিক। নিজের আসল পরিচয় প্রকাশ করে মদের দোকানের ভিতরে ঢোকেন। খতিয়ে দেখেন ব্যবসা সংক্রান্ত নথি। সেইসঙ্গে, বেআইনিভাবে ক্রেতাদের কাছ থেকে বোতল পিছু অতিরিক্ত ২০ টাকা আদায় করার জন্য দোকানিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করেন তিনি।
আশপাশের লোকজন এসব দেখে চমকে গেলেও আদতে তারা মজাই পেয়েছে। বিশেষ করে সুরাপ্রেমীরা জেলাশাসকের এই উদ্যোগ ও তৎপরতায় বেজায় খুশি হয়েছেন।
এদিকে, এই ঘটনার ভিডিয়ো ও ছবি ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ওই জেলাশাসককে অধিকাংশ নেটিজেনই সাধুবাদ জানিয়েছেন। কেউ কেউ আবার মশকরাও করেছেন। তবে, সামগ্রিকভাবে একজন আমলার এমন কর্মতৎপরতায় খুশিই হয়েছে আমজনতা।
তাদের বক্তব্য, সমস্ত সরকারি আমলা ও আধিকারিক যদি এভাবেই তৎপরতার সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে অসাধু ব্যবসায়ীরা জব্দ হবে এবং অন্য়ায়ভাবে মানুষকে অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্যও করতে পারবে না।