বিয়ের ৬ বছর পর উত্তরপ্রদেশে বেআইনিভাবে ধর্মান্তরের অভিযোগে এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করল পুলিশ। অভিযোগ, তিনি প্রতারণা করে ভিন ধর্মের একজন সহকর্মী মহিলা ডাক্তারকে বিয়ে করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে গাজিয়াবাদ থেকে বৃহস্পতিবার উত্তরপ্রদেশের ধর্মান্তর আইন ২০২১-এর অধীনে চিকিৎসককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত চিকিৎসকের নাম আব্দুর রহমান।
আরও পড়ুন: ফেসবুকে মেয়েদের ফাঁদে ফেলতে হিন্দু নাম ব্যবহার, লাভ জেহাদের বিরুদ্ধে কড়া অসম
জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসক নয়ডার একটি বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। সেখানে কাজ করতেন মহিলা চিকিৎসক হর্ষ সারাঙ্গি। সেখানেই তাঁদের প্রেমালাপ হয়। তাঁরা একে অপরকে বিয়ে করতে চাইছিলেন। আর সেখানেই ঘটে বিপত্তি। কারণ সেখানে বাঁধ সাধে ধর্ম। তাই রহমান হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর হিন্দু রীতি মেনেই তিনি মহিলা চিকিৎসককে ২০১৮ সালে একটি হিন্দু মন্দিরে বিয়ে করেন। তাঁদের একটি সন্তানও রয়েছে। এরইমধ্যে অভিযোগ ওঠে, রহমান ধর্ম পরিবর্তন করলেও ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করতে থাকেন। এমনকী ২০২১ সালের জুন মাসে জন্ম হওয়া ছেলের নাম ইসলাম মতেই রাখা হয়। ঘটনায় কয়েকদিন আগেই মহিলা চিকিৎসকের মা অর্থাৎ রহমানের শাশুড়ি তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ডিসিপি (গাজিয়াবাদ সিটি) রাজেশ কুমার সিং বলেন, মহিলা ডাক্তারের সঙ্গে পরিচয়ের ১১ মাস পর রহমান ধর্ম পরিবর্তন করেন এবং তাঁকে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যে হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। তিনি জানান, গত ১৪ অগস্ট কোতোয়ালি থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। মহিলা চিকিৎসকের মা সাংভিকা সারঙ্গি অভিযোগ করেছেন। শুধু তাই নয়, রহমান তাঁর মেয়েকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন সাংভিকা। যার জন্য দিল্লির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়েছিল তাঁর মেয়ের।
অন্যদিকে, রহমান দাবি করেছেন, যে নয়ডার ফ্ল্যাটে চা তৈরির সময় আগুনে পুড়ে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। ডিসিপি জানান, তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পেরেছে, যে রহমান বিয়ের জন্য হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন ঠিকই, তবে তিনি কখনই হিন্দু ধর্মকে সম্পূর্ণ হৃদয় থেকে অনুসরণ করেননি।
মহিলা চিকিৎসকের মায়ের আরও অভিযোগ, যে রহমান ‘লাভ জিহাদের’ ষড়যন্ত্র করতেই তাঁর মেয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলেন এবং প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করেছিলেন। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ইউপির ধর্মান্তর আইন ২০২১ এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩২৬ (গুরুতর আঘাত করা) এবং ৪২০ (প্রতারণা)-এর অধীনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ।