হাসপাতাল থেকে মৃত যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য আনা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ওই যুবকের দেহ ছুঁতেই হতবাক হয়ে যান। কারণ তিনি খেয়াল করেন, ওই মৃত যুবকের গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গিয়েছে! এক মৃত যুবকের বেঁচে ওঠার ঘটনায়, শোরগোল পড়ে গিয়েছে কর্ণাটকে। সোমবার এই ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বাগালকোটের মহালিঙ্গাপুর সরকারি হাসপাতালে।
জানা গিয়েছে, ২৭ বছরের শংকর গোম্বি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মহালিঙ্গাপুরের রাবাকাভি রোডে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। গুরুতর আহত ওই যুবককে বেলাগাভি জেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই যুবকের মস্তিষ্কের মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করে। তারা মৃতের পরিবারকে দেহ নিয়ে যেতে বলে। সোমবার ওই যুবকের দেহ মাহালিঙ্গাপুর সরকারি হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।
ওই যুবকের ময়নাতদন্তের ভার পড়ে তালুক স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক এসএস গালগালি’র উপর। তিনি বলেন, ‘যখন আমি হাসপাতালের দিকে আসছিলাম তখন শহরজুড়ে ওই যুবকের মৃত্যু ঘোষণা করে তাঁর ছবি দিয়ে ব্যানার–পোস্টার পড়েছিল। তাই অপারেশনের টেবিলে আসা ওই যুবকের মুখ চিন্তে অসুবিধা হয়নি। ‘দ্য হিন্দুস্তান টাইমস’–কে ওই চিকিৎসক বলেন, ‘কিন্তু আমি ভাবতে পারিনি ওই যুবক জীবিত রয়েছে’! ওই চিকিৎসক দেখেন, ওই যুবক ভেন্টিলেটরে রয়েছে। তিনি ওই পরিবারের কাছে জানতে চান কেন তাঁকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। তখন পরিবারের লোকেরা বলেন, ‘ওই বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাঁদের জানানো হয়েছিল, যদি ভেন্টিলেটর থেকে বের করা হয়, তাহলে ওই যুবকের নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হবে। সেজন্য তারা দেহের সৎকারের ব্যবস্থাও করেছিলেন। এমনকী, ওই যুবকের বন্ধুরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর খবর পোস্টও করে দেয়।’
চিকিৎসক গালগালি জানান, তখন হাসপাতাল চত্বরে হাজার মানুষ ভিড় জমিয়ে ফেলেছিল।কিন্তু অটোপ্সি করতে যখন ওই যুবকের দেহ ছুঁতে যাই, তখন দেখি তাঁর গায়ের লোম খাঁড়া হয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ ওই যুবকের দেহে প্রাণ ছিল। তখনই আমি পালস অক্সিমিটার দিয়ে পরীক্ষা করে বুঝতে পারি, তাঁর হৃদস্পন্দন সচল। আমি তাঁকে ভেন্টিলেটর থেকে বের করতেই আশ্চর্য হয়ে যাই। দেখি, ওই যুবকের হাত নড়ছে। সঙ্গে সঙ্গে তাঁর পরিবারকে বিষয়টি জানিয়ে অন্য বেসরকারি হাসপাতালে পাঠাই।
মঙ্গলবার সকালে ওই চিকিৎসক জানতে পারেন, গোম্বির শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। ওই চিকিৎসক জানান, উপযুক্ত চিকিৎসায় ওই যুবকের বাঁচার সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসক গালগালি বলেন, ‘১৮ বছরের দীর্ঘ কর্মজীবনে ৪০০টি দেহের ময়নাতদন্ত করেছি। কিন্তু এরকম ঘটনা আগে কখনও দেখিনি।’ বাগাকোটের এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত কোনও চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগ দায়ের হয়নি। জেলার স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি দেখছে।