দু-দু'টো পেল্লায় জেনারেটর রয়েছে। তারপরও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে ভরসা মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইট! আর সেই আলোতেই গুরুতর জখম রোগীদের চিকিৎসা করলেন চিকিৎসকরা! ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরের একটি সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
এনডিটিভি-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, কানপুরের একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে ওই কমিউনিটি হেল্থ সেন্টার বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বৃহ্স্পতিবার ওই এলাকায় লোডশেডিং হয়ে যায়। ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিও কার্যত অন্ধকারে ডুবে যায়। অথচ, সেখানে নাকি দু'টি জেনারেটর আছে! কিন্তু, প্রয়োজনের সময় সেই জেনারেটরের কোনও ভূমিকা দেখা যায়নি।
এদিকে, এরই মধ্যে ওই এলাকায় একটি পথ দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর জখম রোগীদের তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয় এই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কিন্তু, সেখানে তখন ঘোর অন্ধকার। ফলত, মোবাইলের টর্চ বা ফ্ল্যাশ লাইট জ্বেলেই শুরু হয় রোগীদের চিকিৎসা। চিকিৎসকরা এভাবেই কোনও মতে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হন।
সেই ঘটনার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। তাতে দাবি করা হয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে কানপুরের সিকান্দ্রা কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে। সেই ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, চারিদিক অন্ধকার। তার মধ্যেই কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন। আর সেই আলোয় রোগীদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দু'টি জেনারেটর আছে ঠিকই। কিন্তু, সেগুলি ব্যবহারই করা হয় না! যার ফলে চিকিৎসকরা এভাবে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
সূত্র মারফত আরও জানা গিয়েছে, যে সময় এই ঘটনা ঘটেছে, তার কিছুক্ষণ আগেই সিকান্দ্রায় একটি ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘটে। তাতে দুই শ্রমিককে প্রাণ হারাতে হয়। গুরুতর জখম হন আরও ১৩ জন। আহতদের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। পর্যাপ্ত আলো না থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তাঁদের পরিষেবা প্রদান করেন।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অরুণ কুমার সিং কার্যত এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর সাফ কথা, কেন প্রয়োজনের সময় দু'টি জেনারেটর এবং সংশ্লিষ্ট ইনভার্টার সিস্টেম চালু করা হল না, তা খতিয়ে দেখে অবিলম্বে রিপোর্ট জমা করতে হবে।
যদিও তাঁকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে এও লেখা হয়েছে, 'ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দু'টি জেনারেটর রয়েছে, ইনভার্টার সিস্টেম রয়েছে। আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্যই তো এই ব্যবস্থা। জরুরি বিভাগ, লেবার রুম এবং ওপিডি সেকশনে এই ব্যবস্থাপনা রয়েছে। আমি ওখানকার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ওই ইনভার্টার বেশ কিছুক্ষণ চলার পর আচমকাই বন্ধ হয়ে যায়। পরে সেটা ঠিক করা হয়। ওখানে সব ব্যবস্থা রয়েছে।'