পূর্ব লাদাখে চলছে ভারত-চিন দ্বৈরথ্। আচমকা সীমান্ত লাগোয়া চার জায়গায় সেনা বাড়িয়েছে চিন। ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত। মঙ্গলবার রাতে পুরো বিষয়টি সম্বন্ধে বিস্তারিত ভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জানান তিন বাহিনীর প্রধান, বিপিন রাওয়াত ও অজিত ডোভাল। সূত্রের খবর, ঠিক করা হয়েছে যে কোনও ভাবেই দৌলত বেগ ওল্ডি সেক্টরে রাস্তা বানানোর কাজ বন্ধ হবে না চিনের রক্তচক্ষু সত্ত্বেও।
চিনের ভয় যে ওই রাস্তা হলে তাদের লাসা-কাসঘর হাইওয়ের ওপর ভারতের নজর পড়বে। এই কারণেই তারা সেনা বাড়িয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যেরকম সংখ্যক সেনা মোতায়েন করেছে চিন, তাতে মনে করা হচ্ছে এতে বেজিংয়ের আশীর্বাদ আছে। শুধু কোনও স্থানীয় কম্যা্ন্ডারের কাজ এটি নয়।
মোদীর বৈঠকের পর এর সরকারি অধিকর্তা বলেন যে সারা বিশ্বেই চিন নিজের প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে যে কোনও উপায়। মোদীর বৈঠকে তিন জন ছিলেন যারা তিন বছরের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন। এরা হলেন জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল, চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত ও বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। ডোকলামের সময়ও এরা ছিলেন পুরোভাগে ভারতের রণনীতি ঠিক করার ক্ষেত্রে। জয়শংকর তখন ছিলেন বিদেশ সচিব, রাওয়াত ছিলেন সেনাপ্রধান।
ডোকলামের মতোই এবার রণনীতি নিয়েছে ভারত। চিনকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়া হবে না। এলএসি-তে উত্তেজনা কমুক এটা চায় ভারত। কিন্তু সেটা যেন পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও কথাপোকথনের মধ্যে দিয়ে হয়, সেটার বিষয় স্পষ্ট ভারত। সব রকমের পরিস্থিতির জন্য টিম ডোকলামকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ভারত মনে করছে যে সীমান্তে রাস্তা বানানোর কাজ স্তব্ধ করার জন্যেই ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে চিন। ডারবুক-শ্যোক-ডিবিও রোড একবছরেই তৈরী হবে। এতে ওই জায়গায় ভারতের ক্ষমতা বাড়বে। কোনও ভাবে রাস্তা না হলে অনেক ঘুরে যেতে হয় ভারতীয় সেনাকে।
এক প্রাক্তন সেনা প্রধানের কথায় চিন নিজের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় রাস্তা বানালে ভারত আপত্তি করে না। কিন্তু ভারত বানালে চিনের গোঁসা। ভাবখানা এমন যেন চিন রাস্তা বানাচ্ছে পর্যটনের জন্য ও ভারত বানাচ্ছে প্রতিরক্ষার জন্য!
কোনও ভাবেই শি জিনপিংয়ের এই সীমান্ত পেরিয়ে জায়গা দখল করার নীতিকে মানবে না ভারত, তাই পিছু হটার প্রশ্নই নেই। সেই কারণেই সীমান্তে আরও সেনা বাড়াচ্ছে ভারত, তাদের চলছে ওখানকার পরিস্থিতির সম্বন্ধে সড়গড় হওয়ার প্রক্রিয়া।
বৈঠকের পর এক ক্যাবিনেট মন্ত্রী বলেন যে ইতিমধ্যেই নিজেদের মুখপত্রের মাধ্যমে ১৯৬২ সালের যুদ্ধের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে চিন। কিন্তু এটা ২০২০ ও ভারতের নেতা হলেন নরেন্দ্র মোদী।