মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়ার বাটলারে এক নির্বাচনী জনসভা চলাকালীন গুলি চলল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে। ভরা সমাবেশে বন্দুকধারীর গুলিতে এক দর্শক নিহত হয়েছেন। এদিকে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও নিহত হয়েছেন এই ঘটনায়। এছাড়া আরও এক দর্শকের অবস্থা গুরুতর। এদিকে এই ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাম্প নিজেও। তাঁর কান ঘেঁষে একটি গুলি চলে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এতে তাঁর কানের লতি থেকে রক্তপাত হতে দেখা গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এ ঘটনাকে হত্যার চেষ্টা হিসেবে গণ্য করে তদন্ত শুরু করছে।
এই ঘটনার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন এবং গুলির শব্দ শুনে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাঁকে ঘিরে ফেলছেন। তখন ট্রাম্পের মুখে রক্তাক্ত। সেই অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই গুলি চালনার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। পরে সিক্রেট সার্ভিস জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প 'ভালো আছেন'। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করে। এর আগে ১৯৮১ সালে রোনাল্ড রিগ্যান এক জনসভায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন মার্কিন মুলুকে। এরপর এই প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট বা প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে হত্যার চেষ্টা হল আমেরিকায়। এর আগে ১৯৬৩ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। পরে ১৯৬৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় রবার্ট এফ কেনেডিসহ বেশ কয়েকজন নির্বাচনী প্রার্থীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। ১৯৭২ সালে নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা জর্জ ওয়ালেসকে একটি প্রচারণা মঞ্চে গুলি করা হয়েছিল। এদিকে এবছরই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেই ভোটের আর মাত্র চার মাস বাকি। তার আগে এ হামলা চালানো হল।
ভিডিয়োতে দেখা যায়, ট্রাম্প বক্তব্য রাখতে রাখতে হঠাৎ কানে হাত দেন এবং তারপরই নিচে পড়ে যান। গুলি চলার আওয়াজ শোনা যায়। তাঁর পিছনে থাকা দর্শকরাও তখন ঝুঁকে পড়েন। এরপর আরও দু'বার গুলি চলেছিল। এরপরই তড়িঘড়ি সিক্রেট সার্ভিস ট্রাম্পকে সমাবেশ থেকে বের করে একটি গাড়িতে তোলে। গাড়িতে ওঠার আগে অবশ্য ট্রাম্প হাত তুলে সমর্থকদের প্রতি অভয় বার্তা দেন। এরপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে এই গুলি চলনার ঘটনার বিষয়ে অবিহিত করা হয়। তিনি বলেন, 'পেনসিলভেনিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশে গোলাগুলির বিষয়ে আমাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নিরাপদে আছেন এবং ভালো আছেন শুনে আমি কৃতজ্ঞ। আমি তার এবং তার পরিবার এবং সমাবেশে উপস্থিত সকলের জন্য প্রার্থনা করছি। ট্রাম্পকে নিরাপদে সরিয়ে আনার জন্য জিল এবং আমি সিক্রেট সার্ভিসের কাছে কৃতজ্ঞ।' এদিকে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'আমাদের গণতন্ত্রে রাজনৈতিক হিংসার কোনও জায়গা নেই।' এদিকে এফবিআই এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলি গুলি চালানোর ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে।