মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার একটি উজ্জ্বল লাল রঙের টেসলা মডেল এস কিনেছেন। এ সময় টেসলার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক উপদেষ্টা ইলন মাস্ক উপস্থিত ছিলেন। ইলন মাস্ককে 'দেশপ্রেমিক' বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্প। হোয়াইট হাউজের দক্ষিণ লেনে 'অনুষ্ঠানটি' হয়। সেখানে পাঁচটি টেসলা গাড়ি আনা হয়েছিল। জায়গাটি কার্যত অস্থায়ী গাড়ির শোরুমে পরিণত হয়েছিল। (আরও পড়ুন: শুল্ক যুদ্ধে US-কে জমি ছাড়বে না কানাডা, লড়াই এবার ব্যবসায়ী বনাম অর্থনীতিবিদের)
আরও পড়ুন: ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে 'উল্লাস' করায় যুবকদের মাথা ন্যাড়া করাল পুলিশ
জানা গিয়েছে, ট্রাম্প যে গাড়িটি কিনেছেন তার দাম প্রায় ৭৬,৮৮০ ডলার (প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা)। যদিও নিরাপত্তা প্রটোকল অনুযায়ী ট্রাম্প নিজে কখনও এই গাড়ি চালাতে পারবেন না। প্রেসিডেন্ট বলেন, এই টেসলাটি হোয়াইট হাউসের কর্মীদের ব্যবহারের জন্য রাখা হবে। হাসতে হাসতে মাস্ক বলেন, 'প্রেসিডেন্টের ক্রেডিট স্কোর ভালো, আমি আত্মবিশ্বাসী যে চেক ক্লিয়ার হয়ে যাবে।' ইলন মাস্ক কার্যত প্রেসিডেন্টকে দিয়ে টেসলার 'প্রোমোশন' করান হোয়াইট হাউজে। (আরও পড়ুন: স্ত্রী ঊষাকে নিয়ে ভারতে আসছেন US ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স, শুল্ক জট কি কাটবে?)
আরও পড়ুন: মস্কোতে ড্রোন হামলা চালানোর পর 'ভদ্র ছেলের' মতো আমেরিকার কথা মেনে নিল ইউক্রেন
ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ারের দাম এক ধাক্কায় ১৫ শতাংশ কমে যায় সোমবার। ট্রাম্পের নীতিতে হতভম্ব বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজার থেকে নিজেদের বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন। এই শেয়ার বিক্রির হিড়িকের জেরে পতন জারি আছে মার্কিন শেয়ার বাজারে। আর ট্রাম্পের সরকারের নীতির সঙ্গে অনেকাংশেই জড়িয়ে ইলন মাস্ক নিজে। এই সবের মাঝে মাস্কের সংস্থার শেয়ারের দাম পড়ছে হু হু করে। ২০২০ সালের পরে টেসলার শেয়ার একদিনে এতটা পড়েনি। তবে ট্রাম্প টেসলা কেনার পরই সংস্থার শেয়ারের দাম ৩.৭৯ শতাংশ ওঠে মঙ্গলবার। (আরও পড়ুন: অভ্যুত্থান ঘিরে জল্পনা, বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতে মুখ খুলল বাংলাদেশি সেনা)
এর আগে ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর টেসলার শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ৪৭৯ ডলারে পৌঁছে গিয়েছিল। বর্তমানে সেই সর্বোচ্চ রেটের থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ নীচে নেমে গিয়েছে মাস্কের সংস্থার শেয়ারের দাম। এদিকে মাস্কের নিজের নেট ওয়ার্থও কমেছে হু হু করে। এই বছরে এখনও পর্যন্ত এই ধনকুবেরের নেট ওয়ার্থ কমেছে প্রায় ১৪০ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। যদিও এখনও তিনিই বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। তবে তাঁর সংস্থার হাল ততটাও ভালো নেই। এমনিতেই চিনে টেসলাকে কড়া টক্কর দিচ্ছে চিনের সংস্থা বিওয়াইডি। এদিকে ভারতের মুম্বইতে টেসলা নিজেদের প্রথম শোরুম খোলার পথে হেঁটেছে।
এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে কোভিডকালে টেসলার শেয়ারের দাম এক ধাক্কায় কমে গিয়েছিল ২১ শতাংশ। অর্থাৎ ১০ মার্চ মাস্কের সংস্থার শেয়ারের দাম কমে ১৫.৪ শতাংশ। গত ১ মাসে টেসলার শেয়ারের দাম কমেছে ৩৬.৬ শতাংশ। ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বরে যেখানে টেসলার বাজার দর ছিল ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার, সেখানে মাস্কের সংস্থার বর্তমান বাজার দর ৭০০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এর মঙ্গলবার মার্কিন শেয়ার বাজার বন্ধের সময় টেসলার শেয়ারের দাম ছিল ২৩০.৫৮ ডলার। ১১ মার্চ ৪০.৫২ ডলার দাম কমেছিল টেসলার। আর মঙ্গলে তা বেড়েছে ৮.৪৩ ডলার।
১১ মার্চে শেয়ারের দামে পতনের পরও বিনিয়োগকারীদের ইলন মাস্ক আশ্বস্ত করেছেন, দীর্ঘমেয়াদে সংস্থার শেয়ার দর স্থিতিশীল থাকবে। তবে টেসলার গাড়ি বিক্রি কমে গিয়েছে। গত কোয়ার্টারে টেসলা নাকি মাত্র ৪ লাখ ৬৭ হাজার গাড়ি ডেলিভার করেছে। এদিকে জার্মানিতে ইলন মাস্ক নিজে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিলেন নির্বাচনের সময়। এই আবহে টেসলার রেজিস্ট্রেশন কমেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। সব কিছু মিলিয়ে টেসলা এবং মাস্কের সময়টা বেশ কঠিন চলছে।