২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনের সময় পর্নস্টারকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলার শুনানি চলছে নিউইয়র্কে। সেই মামলায় জুরি সদস্যরা ইতিমধ্যেই নিজেদের মধ্যে রায় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। এই আবহে নিজেকে মাদার টেরিজার সঙ্গে তুলনা করলেন ট্রাম্প। নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলছে নিউইয়র্কের আদালতে। বুধবার সেই মামলায় জুরি সদস্যদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে রায় নিয়ে। এই আবহে মামলায় বিচারককে আক্রমণ শানিয়ে নিজেকে মাদার টেরিজার সঙ্গে তুলনা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। (আরও পড়ুন: '...বিশ্বে কেউ গান্ধীকে চিনত না', কংগ্রেসকে তোপ দাগতে গিয়ে বিস্ফোরক দাবি মোদীর)
আরও পড়ুন: 'লিড নেব',ভোট সপ্তমীর আগে বাংলায় BJP'র আসন সংখ্যা নিয়ে 'প্লাস-মাইনাস' দাবি শাহের
এই আবহে ট্রাম্প বলেন, 'এই মামলার বিচারকের স্বার্থের সংঘাত রয়েছে। তিনি খুবই দুর্নীতিগ্রস্ত। আমার জায়গায় যদি আজ মাদার টেরিজা থাকতেন, তিনিও এই সব অভিযোগ ওড়াতে পারতেন না। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভুয়ো। তবে এই গোটা জিনিসটাই আগে থেকে নির্ধারিত। এই গোটা দেশ উচ্ছন্নে গিয়েছে। সীমান্ত থেকে ভুয়ো নির্বাচন... আর এখন এই ভুয়ো মামলা।' উল্লেখ্য, এই বিচারের দায়িত্বে থাকা বিচারক হুয়ান মেরচানকে মামলা থেকে সরাতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে আজকে মামলার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হতেই বিচারক মেরচান জানিয়ে দেন, তিনি এই মামলা থেকে সরছেন না। এর আগে ট্রাম্পের অভিযোগ ছিল, মেরচানের মেয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে রাজনৈতিক পরামর্শদাতা। এই আবহে বিচারকে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ করার সবার্থে বিচারক বদলের আর্জি জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তাঁর সেই দাবি ধোপে টেকেনি।
আরও পড়ুন: সেনসেক্সে 'ধসের' পর শেয়ার বাজার নিয়ে বড় দাবি শাহের, বললেন- '১২০০-১৩০০ পয়েন্ট…'
প্রসঙ্গত, প্রথম মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়ে লজ্জার ইতিহাস গড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নিজের যৌন কেলেঙ্কারি ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত ট্রাম্প। এদিকে আর কয়েক মাসের মধ্যেই আমেরিকায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে মার্কিন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ট্রাম্প রিপাবলিকান প্রার্থী হয়ে বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়বেন সেই নির্বাচনে। তার আগে অবশ্য এই মামলার বিচার অস্বস্তিতে ফেলবে ট্রাম্পকে।
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জয়ে লাভবান হতে পারে এই সব 'মোদী শেয়ার', দাবি CLSA-র
জানা যাচ্ছে, এই মামলায় মোট চারটি অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে ৫ নভেম্বরের ভোটগ্রহণের আগে একটি মাত্র অভিযোগের বিচার সম্পন্ন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে এই মামলায় ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলেও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন। তবে রয়টার্সের এক সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছে, মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের নির্বাচন জেতার সম্ভাবনা অনেকটা বড় ধাক্কা খেতে পারে।
আরও পড়ুন: পাইলট মোডে 'গার্ল পাওয়ার', এবার মহিলা যাত্রীদের জন্য নয়া উদ্যোগ ইন্ডিগোর
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় পর্নস্টার স্টর্মির মুখ বন্ধ করতে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল এই মামলা। স্টর্মির দাবি, ২০০৬ সালে নেভেদায় সেলেব্রিটিদের একটি গলফ প্রতিযোগিতায় ট্রাম্পের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালে একটি শো'তে অংশগ্রহণ করে লস অ্যাঞ্জেলসে বেভারলি হিলসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বাংলোয় দেখা করেছিলেন স্টর্মি। এরপর ২০১১ সালে ইন টাচ ম্যাগাজিনে স্টর্মি দাবি করেন যে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। সেই সংক্রান্ত একাধিক তথ্যও দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন যে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন। এই বিতর্কের পর ২০১৬ সালে রিপাবলিকানদের হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ট্রাম্পের সঙ্গে 'সম্পর্কের' বিষয় নিয়ে মুখ না খোলার জন্য স্টর্মিকে ১৩০,০০০ মার্কিন ডলার দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের আইনজীবী। এরপর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্পের আইনজীবী দাবি করেছিলেন যে স্টর্মিকে নিজের থেকে অর্থ দিয়েছিলেন। ট্রাম্প ওই বিষয়ে কোনও নির্দেশ দেননি। অবশ্য এখন ট্রম্পের বিরুদ্ধে স্টর্মিকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে মামলা চলছে।