তাঁর আশায় জল ঢেলে নোবেল কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে ভেনেজুয়েলার প্রধান বিরোধী নেত্রী মারিয়া করিনা মাচাদোই পাচ্ছেন এবারের পুরস্কার। গত কয়েক মাস ধরেই নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য তিনি বারবার দাবি করে গিয়েছেন বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ থামানোর। এমনকী নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে তিনি আবেদন জানান এই পুরস্কার তাঁকে দেওয়ার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নোবেল স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। আর এসবের মধ্যেই তাঁর পূর্বসূরী বারাক ওবামার নোবেল প্রাপ্তির তীব্র সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আরও পড়ুন-বিপাকে ভারতীয়রা! ফি বৃদ্ধিতে সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প, H-1B ভিসায় আরও বিধিনিষেধ আরোপ?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছেন, ওবামা তাঁর রাষ্ট্রপতিত্বের মাত্র কয়েক মাস পরেই নোবেল জিতেছেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ট্রাম্প বলেন, 'তিনি কিছুই না করার জন্য এটি পেয়েছিলেন। ওবামা একটি পুরষ্কার পেয়েছিলেন-তিনি এমনককী কী জানতেন না - তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন, এবং তাঁরা ওবামাকে এটি দিয়েছিল আমাদের দেশকে ধ্বংস করা ছাড়া একেবারে কিছুই না করার জন্য।' ২০০৯ সালে ওবামা যখন তাঁর প্রথম মেয়াদে আট মাস ছিলেন তখন তিনি মর্যাদাপূর্ণ নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই পদক্ষেপ অনেককে হতবাক করেছিল। 'নিউ ইয়র্ক টাইমস' রিপোর্ট অনুযায়ী, স্বীকৃতি 'খুবই অকাল' এবং যুক্তি দিয়েছে যে নোবেল 'এর চেয়ে উচ্চতর মান থাকা উচিত।' ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, 'ওরা ওবামাকে এটা (নোবেল শান্তি পুরস্কার) দিয়েছে আমাদের দেশ ধ্বংস করার জন্যই।' তিনি আরও বলেন, 'আমি আটটি যুদ্ধ বন্ধ করেছি, তাই আগে কখনও এমনটা হয়নি-তবে তাদের যা করার তাই করতে হবে। তারা যাই করুক না কেন, ঠিক আছে। আমি জানি, আমি এটা এর জন্য করিনি, আমি এটা করেছি কারণ আমি অনেক জীবন বাঁচিয়েছি।'
অন্যদিকে, শুক্রবার রাজনীতিতে বিরাট উলটপুরাণের সাক্ষী থাকল গোটা বিশ্ব। মারিয়া করিনা মাচাদোইয়ের নাম ঘোষণার আগে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন জানায় রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে বারবার এগিয়ে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা থেকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক, সব পদ্ধতি অবলম্বন করার চেষ্টা করেছেন তিনি। এরমধ্যে সাম্প্রতিকতম প্রেচেষ্টা ছিল পুতিনের সঙ্গে আলাস্কার বৈঠক। মস্কো বেশ কয়েকবার ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে ট্রাম্পের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছে। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার বিষয়ে সফল হলে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করবে কিয়েভ। এরপরেই ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য ট্রাম্পকে সমর্থনের কথা জানায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্পের স্বপ্ন ভেঙে যায়।
আরও পড়ুন-বিপাকে ভারতীয়রা! ফি বৃদ্ধিতে সন্তুষ্ট নন ট্রাম্প, H-1B ভিসায় আরও বিধিনিষেধ আরোপ?
জানুয়ারিতে ট্রাম্প ওভাল অফিসে ফিরে আসার পর থেকে, নরওয়ের অসলো শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে প্রভাবিত করার জন্য তার প্রচারণা-যা নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রার্থীদের পর্যালোচনায় নোবেল কমিটিকে সমর্থন করে-সূক্ষ্মভাবে কিছুটা হলেও সূক্ষ্ম। ট্রাম্প ঘটনাবলী এবং সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব গ্রহণ করছিলেন, প্রায়শই তাঁর ব্যক্তিগত প্রভাবকে অতিরঞ্জিত করেছিলেন। গত মাসে, তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য নিজেকে মনোনীত করেছিলেন। রাষ্ট্রসংঘে তাঁর ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন যে তিনি 'সাতটি অন্তহীন যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন।' যদিও ট্রাম্প নিশ্চিতভাবেই কিছু দীর্ঘস্থায়ী শত্রুর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদান রেখেছিলেন, তবুও তিনি যে অন্যান্য সংঘাতের অবসানের কথা গর্ব করে বলেছেন, তারমধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তাঁর ভূমিকা বেশ বিতর্কিত।