বিদায়বেলায় কলঙ্কিত হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে তাণ্ডবে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে ইমপিচড করলেন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের প্রতিনিধিরা। তার ফলে আমেরিকার সুদীর্ঘ ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রেসিডেন্ট দু'বার ইমপিচড হলেন।
ক্যাপিটলের বাইরে ও ভিতরে জাতীয় সুরক্ষা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ২৩২-১৯৭ ভোটে পাশ হয়ে যায় ইমপিচমেন্টের প্রস্তাব। ইউক্রেনের সঙ্গে চুক্তির জন্য ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ট্রাম্প যখন প্রথমবার ইমপিচড হয়েছিলেন, তখন তাঁর দল রিপাবলিকানের সদস্যরা ইমপিচমেন্টের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু এবার ‘বিদ্রোহে প্ররোচনা’-র দায়ে ডেমোক্র্যাটরা যে ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নিয়ে আসেন, তাতে ভোট দেন ১০ রিপাবলিকানও।
ইমপিচমেন্টের বিতর্ক শুরুর আগে আব্রাহাম লিঙ্কন এবং বাইবেলকে উদ্ধৃত করে সংবিধানের রক্ষার জন্য সমস্ত আইনপ্রণেতারা যে শপথ নিয়েছিলেন, তা মেনে কাজ করার আর্জি জানান হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। বলেন, ‘তার (ট্রাম্প) অবশ্যই যাওয়া উচিত। আমরা যে দেশকে ভালোবাসি, সেই দেশের পক্ষে বিপজ্জনক উনি।’
বুধবার (স্থানীয় সময়) ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া যখন চলছিল, তখন অবশ্য হোয়াইট হাউসে নিজেকে বন্দি করে রেখেছিলেন ট্রাম্প। চোখ রেখেছিলেন টিভিতে। হিংসার কোনও দায়ভার ঝেড়ে দিয়ে একটি বিবৃতিতে ট্রাম্প আর্জি জানান, হোয়াইট হাউসে জো বাইডেনের প্রবেশ ব্যাহত করতে ‘কোনও হিংসা, কোনও আইনভঙ্গ এবং কোনওরকম হাঙ্গামা’ যেন না করা হয়। যদিও এফবিআইয়ের আশঙ্কা, আগামিদিনে আরও হিংসা ছড়িয়ে পড়তে পারে। সে প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি সেটার (হিংসার) প্রতিরূপ নই। আমেরিকাও সেটার প্রতিরূপ নয়। উত্তেজনা প্রশমনে এবং রাগ কমিয়ে ফেলার কাজে সাহায্য করার জন্য আমি সকল আমেরিকানদের আহ্বান জানাচ্ছি।’
তারইমধ্যে আপাতত যাবতীয় নজর সেনেটের দিকে পড়তে চলেছে। হাউসের প্রস্তাব কংগ্রেসের উচ্চকক্ষে পাঠানোর পর সেখানে ট্রাম্পকে ইমপিচমেন্টের পক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ সেনেটরের ভোট পড়তে হবে। তাহলে ইমপিচট হবেন ট্রাম্প। তবে হাতে আর মাত্র সাতদিন থাকায় ট্রাম্প যে মেয়াদ শেষের আগে ক্ষমতাচ্যুত হবেন না, তা প্রায় নিশ্চিত। তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ট্রায়াল চলবে। রিপাবলিকান সেনেট নেতার মিচ ম্যাককোনেলের কার্যালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, আগামী মঙ্গলবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের ট্রায়াল শুরু হবে। তার পরেরদিনই ট্রাম্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্টের যে প্রস্তাব আনা হয়েছে, তাতে ট্রাম্পকে ভবিষ্যতে কখনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করতে দেওয়ারও সওয়াল করা হয়েছে।