যুক্তরাষ্ট্র ও ইজরায়েলসহ তার মিত্রদের 'নিশানা' করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জন্যে তিনি একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করবেন। এই ইস্যুতে হোয়াইট হাউজের এক কর্মকর্তা বলেন, কোনও মার্কিন নাগরিক বা মার্কিন সহযোগীর বিরুদ্ধে তদন্তে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে সাহায্য করলে সেই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারের ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করা হবে। এরই সঙ্গে সেই ব্যক্তি এবং তাঁর পরিবারকে ভিসা দেওয়া হবে না। (আরও পড়ুন: ফলের আগে 'খেলা' শুরু দিল্লিতে? '১৬ প্রার্থীকে ২৪০ কোটির অফার',বিস্ফোরক কেজরিওয়াল)
আরও পড়ুন: বাংলাদেশিরা হাতে আইন তুলে নেওয়ায় 'অসন্তোষ', ইউনুসের ব্যর্থতা তুলে ধরে সরব BNP
উল্লেখ্য, এর আগে সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ইজরায়েলের প্রধনমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এই আবহে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল মার্কিন সেনেটে বিল পাশ করিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। তবে ডেমোক্র্যাটদের বাধায় তা সম্ভব হয়নি। এবার অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাহী নির্দেশিকায় সই দিচ্ছেন। এদিকে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বর্তানে ওয়াশিংটন ডিসি সফরে আছেন। ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর প্রথম বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে মার্কিন সফরে গিয়েছেন বেঞ্জামিন।
এদিকে আন্তর্জাতিক আদালতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের 'রোষ' এর আগেও প্রতিফলিত হয়েছে। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তৎকালীন প্রসিকিউটার ফাতৌ বেনদৌসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আমেরিকা। এই ফাতৌ বেনদৌসা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার যুদ্ধ অপরাধ সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আদাত হল ১২৫ সদস্যের একটি ট্রাইবুনাল। নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত এই স্থায়ী আদালতে যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ, গণহত্যার মতো ঘনার বিচার হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, রাশিয়া এবং ইজরায়েল এমনিতেও এর সদস্য নয়।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, গাজা ভূখণ্ডের দখল নেবে আমেরিকা। ট্রাম্পের 'গাজা ঘোষণা'র পরপরই এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল সারা বিশ্বে। এই নিয়ে গতরাতে নিজের বিস্তারিত পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। এটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প লেখেন, 'যুদ্ধ শেষে আমেরিকার হাতে গাজা ভূখণ্ড তুলে দেবে ইজরায়েল। প্যালেস্তিনীয় এবং চাক শুমারদের (মার্কিন সেনেটে মাইনরিটি লিডার, ডেমোক্র্যাট) মতো মানুষরা ইতিমধ্যেই নিরাপদ এবং সুন্দর সমাজে বসবাস শুরু করে দিয়েছে। তাদের এখন অত্যাধুনিক বাড়িঘর আছে। তারা সুখে, শান্তিতে আছে, স্বাধীন আছে।'
এরপর ট্রাম্প আরও লেখেন, 'বড় বড় উন্নয়নমূলক কাজ করা দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ধীরে ধীরে গাজায় নির্মাণকাজ শুরু করবে আমেরিকা। এটা বিশ্বের সবচেয়ে বড় উন্নয়নমূলক প্রকল্প হবে। এতে আমেরিকার কোনও সেনা জওয়ানের প্রয়োজন পড়বে না। এতে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে।'