দিনকয়েক ধরেই জল্পনা চলছিল। এবার তাতে সিলমোহর বসালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানালেন, এইচ-১বি, এল-১-সহ বিদেশি কর্মপ্রার্থীদের ভিসার অনুমোদন বন্ধ রাখা হবে। তার জেরে মার্কিন মুলুকের ভারতীয় সংস্থাগুলি এবং যে ভারতীয়রা আমেরিকায় কাজের পরিকল্পনা করছেন, তাঁরা সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়বেন।
একটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে শনিবার ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা আগামীকাল বা পরদিন ভিসা নিয়ে কিছু ঘোষণা করতে চলেছি। আমার মতে, এটার ফলে অনেক মানুষ খুশি হবেন এবং সত্যি কথা বলতে, এটা সাধারণ বিচারবুদ্ধি।’
নয়া ঘোষণার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাতে অবশ্য অস্বীকার করেন ট্রাম্প। তবে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউনের ফলে মার্কিন অর্থনীতি যেভাবে ব্যাপক ধাক্কা খেয়েছে এবং বেকারত্বের নয়া রেকর্ড তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে নয়া ঘোষণার যোগ রয়েছেন বলে জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকে রয়েছেন, যাঁরা চাকরির খোঁজ করছেন।' তবে কোনও বিধিনিষেধ বা ছাড় দেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়েও মুখ খোলেননি তিনি। শুধু জানান, বড় ব্যবসার লোকবল সুরক্ষিত করতে ‘কিছু’ থাকবে।
মার্কিন রাজনৈতিক মহলের মতে, আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচন। তার আগে প্রবল চাপে রয়েছেন ট্রাম্প। বিশেষত করোনা নিয়ন্ত্রণ, রেকর্ড বেকারত্ব নিয়ে ট্রাম্পের ভূমিকায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ মার্কিন মুলুকের একটি বড় অংশ। ভোটের আগে সেই ক্ষতে প্রলেপ লাগাতেই ভিসা নিয়ে কড়াকড়ির পথে হাঁটছে ওয়াশিংটন। এমনিতেও গতবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রচারপর্ব থেকেই ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির পক্ষে সওয়াল করেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল একটি সেই সংক্রান্ত শাসনমূলক নির্দেশনামা জারিও করেছিলেন।
তারপর থেকেই এইচ-১বি ভিসার অনুমোদন বাতিলের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বাড়তি তথ্য চেয়ে জটিলতা এবং খরচ বাড়িয়ে ঘুরপথে বিদেশি কর্মপ্রার্থীদের উপর কোপ মারছে ট্রাম্পের প্রশাসন। তার জেরে মার্কিন মুলুকের ভারতীয় সংস্থাগুলি নীতি পালটে স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করতে বাধ্য হচ্ছে। এমনিতে প্রতি বছর অত্যন্ত দক্ষ বিদেশিদের ৮৫,০০০ এইচ-১বি স্বল্পকালীন কাজের ভিসা প্রদান করে আমেরিকা। তাঁদের মধ্যে ৭০ শতাংশই ভারতীয়। যাঁরা আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার জন্য আসেন। এছাড়াও গুগুল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো মার্কিন সংস্থা এবং টিসিএস, ইনফোসিস এবং উইপ্রোর মতো ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন। ট্রাম্পের নয়া ঘোষণায় নয়া প্রার্থীদের চিন্তা বেড়েছে।