কয়েকদিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরে হামলা হয়েছিল। এক বন্দুকবাজ তাঁর মাথা তাক করে গুলি চালিয়েছিল। অল্পের জন্যে বেঁচে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। গুলিটি তাঁর কান ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। আর সেই ঘটনার পরে এই প্রথম জনসভায় ভাষণ দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেশনে উপস্থিত ট্রাম্পের ডানকানে ব্যান্ডেজ দেখা যায়। সেই কান ছুঁয়েই গুলি বেরিয়ে গিয়েছিল। আর কনভেনশনে রিপাবলিকানদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, 'আমি ভীষণ নিরাপদ বোধ করছি। কারণ, আমার পাশে ঈশ্বর ছিলেন সেদিন। যদি আমি আমার মাথাটা না ঘোরাতাম, তা হলে আততায়ীর ছোড়া বুলেট নির্ভুল লক্ষ্যে আঘাত হানত। আর আমিও আজ রাতে আপনাদের সঙ্গে থাকতে পারতাম না।' এদিকে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আজ ট্রাম্প বলেন, 'আজ থেকে চার মাস পরে আমরা একটি অতুলনীয় জয় পেতে চলেছি।'
পেনসিলভেনিয়ায় নির্বাচনী জনসভা চলাকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপরে হামলা চালানো হয়েছিল রবিবার। ১২০ মিটার দূরে একটি বাড়ির ছাদ থেকে গুলি করা হয়েছিল ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে। সেই গুলি ট্রাম্পের কান ঘেঁষে চলে গিয়েছিল। এদিকে সেই হামলার পরে ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। একটি ছবিতে দেখা গিয়েছে যে ট্রাম্প মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন। তাঁকে ঘিরে অনেকগুলি পা (সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টদের)। আর ট্রাম্পের গাল গড়িয়ে রক্ত পড়ছে কান থেকে। এদিকে ট্রাম্পের আরও একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, তিনি দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত সমর্থকদের উদ্দেশে উঁচিয়ে তুলেছেন। তাঁকে ঘিরে সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টরা। আর ব্যাকগ্রাউন্ডে মার্কিন পতাকা। এই আবহে আসন্ন নির্বাচনে ট্রাম্পের ওপর হামলা এবং হামলা পরবর্তী এই সব ছবি যে প্রচারের বড় অস্ত্র হতে চলেছে, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। হামলার পরপরই রিপাবলিকানরা ট্রাম্পকে 'আমেরিকান হিরো' হিসেবে তুলে ধরেছে। এদিকে আজকে ট্রাম্পের ভাষণেও সেই হামলার প্রসঙ্গই প্রাধান্য পেল।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো বন্দুকবাজের বয়স মাত্র ২০ বছর ছিল। তাঁর নাম থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর গুলি চালানো বন্দুকবাজের বয়স মাত্র ২০ বছর ছিল। তাঁর নাম থমাস ম্যাথিউ ক্রুকস। এদিকে ট্রাম্পের ওপর হামলা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনার দিন এই নিয়ে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছিলেন, ট্রাম্পের ভাষণ শুরু হওয়ার পাঁচ-সাত মিনিট পরে দেখতে পান যে হামাগুড়ি দিয়ে তাঁদের পাশে থাকা বাড়ির ছাদে একজন উঠছে। তাঁরা যেখানে ছিলেন, সেখান থেকে ওই বাড়িটার দূরত্ব মেরেকেটে ৫০ ফুট হবে। ওই ব্যক্তির হাতে বন্দুক ছিল। তিনি বলেন, 'আমরা পুলিশকে বলি যে এই দেখুন, ওখানে হাতে বন্দুক নিয়ে একজন আছে। পুলিশ যেন দিশাহীন ছিল। ওরা যেন বুঝতেই পারছিল না, আমরা কী বলছি। কেউ যে হামাগুড়ি দিয়ে যাচ্ছে, সেটা যেন ওরা দেখতেই পাচ্ছিল না। আমরা বলতে থাকি যে আমরা এখান থেকে দেখতে পাচ্ছি। ও হামাগুড়ি দিয়ে যাচ্ছে। কেন সেই সময়ই ট্রাম্পকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে আনা হল না? দু'তিন মিনিট ধরে আমি ছাদের দিকে আঙুল দেখিয়ে রেখেছিলাম। উপর থেকে আমাদের দিকে দেখছিলেন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা। আমি শুধু আঙুল তুলে দাঁড়িয়েছিলাম। তারপর পাঁচটা গুলির আওয়াজ শোনা গেল। যেখানে ট্রাম্প জনসভা করছিলেন, সেটা তো খুব বড় এলাকা নয়। তাহলে কেন প্রতিটি বাড়ির ছাদে সিক্রেট সার্ভিস এজেন্টদের রাখা হল না?' এই ব্যক্তি ছাড়াও আরও একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, শুটারকে তারা আগেই দেখে পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়েছিল। তবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি তা নিয়ে।