দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হলেও এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। যদিও তাঁর একের পর এক পদক্ষেপেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে, দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট পদে ফিরে আরও কঠোরভাবে বিভিন্ন প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন তিনি।
সেই প্রেক্ষাপটেই এবার গাজার জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস বাহিনীকে হুঁশিয়ারি দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুঝিয়ে দিলেন, যদি ওই জঙ্গিরা দ্রুততার সঙ্গে গাজায় বন্দি করে রাখা ব্যক্তিদের না ছাড়ে, তাহলে তার মারাত্মক ফল ভুগতে হবে তাদের।
সোমবার গাজার হামাস জঙ্গিদের উদ্দেশে ট্রাম্প বার্তা দেন, তাঁর দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে ঢোকার আগেই ওই অপহৃতদের মুক্তি দিতে হবে। না হলে হামাসকে এর খেসারত দিতে হবে।
গত প্রায় ১৪ মাস ধরে গাজায় যুদ্ধ চালাচ্ছে ইজরায়েল। ওদিকে, হামাস জঙ্গিরাও বহু মানুষকে পণবন্দি করে রেখে দিয়েছে বলে অভিযোগ। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের দাবি, বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও তাঁর প্রশাসন এমন কোনও পদক্ষেপ করতে পারেনি, যার মাধ্যমে এই যুদ্ধ বন্ধ করা যায়, অথবা পণবন্দিদের মুক্ত করা যায়।
সেই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, ট্রাম্প আসলে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার আগেই বুঝিয়ে দিতে চাইছেন, তিনি কড়া হাতে সমস্ত কিছুর মোকাবিলা করবেন!
ট্রাম্প তাঁর সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম 'ট্রুথ সোশাল'-এ এই প্রসঙ্গে লিখেছেন, '২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারির মধ্যে, অর্থাৎ - যেদিন আমি গর্বের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে বসব, যদি তার আগেই পণবন্দিদের মুক্ত না করা হয়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের সেইসব ব্যক্তিকে, যারা এই মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের এর ভয়ঙ্কর খেসারত দিতে হবে।...'
ট্রাম্প এই প্রসঙ্গে আরও লেখেন, '...যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের এমন ধাক্কা দেওয়া হবে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘ ইতিহাসে কখনও কাউকে দেওয়া হয়নি। এখনই ওই পণবন্দিদের মুক্ত করো!'
ট্রাম্প ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, গাজা ইস্যুতে তিনি ইজরায়েলের পাশেই তীব্রভাবে থাকবেন। জো বাইডেন যেমন মাঝেমধ্যে ইজরায়েলের সমালোচনা করেছেন, তিনি যে সেই পথে হাঁটবেন না, তাও কার্যত স্পষ্ট করে দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে, বিশ্বমঞ্চে সকলের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রাখারও বার্তা দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইজারায়েলের উপর সর্বকালের সবথেকে ভয়ঙ্কর হামলা চালায় হামাস। যার জেরে অন্তত ১,২০৮ জনের মৃত্যু হয়। সংবাদ সংস্থা এএফপি-র দাবি অনুসারে, সেই হামলায় নিহত ইজরায়েলিদের অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ নাগরিক।
অভিযোগ, সেই হামলা চালানোর সময়েই ২৫১ জনকে পণবন্দি করে হামাস জঙ্গিগোষ্ঠী। যাঁদের মধ্যে একাংশের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর দাবি, অপহৃতদের মধ্যে অন্তত ৯৭ জন এখনও জীবিত রয়েছেন এবং গাজায় বন্দি রয়েছেন।
অভিযোগ, এর জবাবে গাজায় হামলা চালিয়ে প্রায় ৪৪,৪২৯ জনকে খুন করেছে ইজরায়েলি সেনা। রাষ্ট্রসংঘের তরফে অন্তত এই দাবিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।