ভারতকে চিনের উপর সন্দেহ প্রকাশ করা বন্ধ করতে হবে। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বদলে চিনের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা উচিত ভারতের। গালওয়ান সংঘর্ষের বর্ষপূর্তিতে নয়াদিল্লিকে এই বার্তাই দিল চিনের বিদেশমন্ত্রী। চিনের বক্তব্য, সীমান্ত সমস্যাকে মিটিয়ে দুই দেশকে ধীরে ধীরে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভালো করতে হবে। এবং আরও সমস্যা যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য ঝামেলা তৈরি থেকে বিরত থাকতে হবে।
চিন এদিন ভারতকে আবেদন করেন, ভারতের উচিত চিনের সঙ্গে হাত মিলিয়ে শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এদিকে কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মত, যেভাবে চিনের তরফএ খুল্লাম খুল্লা সম্পর্ক ভালো করার কথা বলা হয়েছে, তা প্রমাণ করছে যে দুই দেশের সম্পর্ক বর্তমানে কতটা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে।
চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বলা হয়, 'আজ গালওয়ান সংঘর্ষের একবছর পূর্তি। এই সংঘর্ষের দায় স্পষ্টতই চিনের ঘেড়ে নয়।' এদিকে গালওয়ান সংঘর্ষ নিয়ে চিনের এই দাবি বরাবর উড়িয়ে এসেছে ভারত। এই আবহে গত একবছরে ক্রমেই ভারত-চিন সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এই প্রসঙ্গে চিনের তরফে বলা হয়, 'ভারত-চিন মধ্যকার সীমান্ত সমস্যা যেমন সত্যি ঘটনা। তেমনই এটাও সত্যি যে সীমান্ত সমস্যাটাই ভারত-চিন সমস্যার সার্বিক কাহিনী নয়।' যদিও ভারতের স্পষ্ট দাবি, গালওয়ান সংঘর্ষের গুরুত্বকে মাথায় রেখে স্বাভাবিক গতিতে ব্যবসা চলতে পারে না।
গতবছর ৬ জুন প্রথমবার ভারত ও চিনা সেনার মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সীমান্ত সমস্যা ও স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলি নিয়ে দু'পক্ষের মধ্যে বৈঠক হয়। ভারতের তরফে জানানো হয়, চিনের সেনা ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছে। এরপর ১৫ জুন দুই দেশের সেনার মুখোমুখি সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা। চিনের তরফে অবশ্য তাদের কোনও সেনার মৃত্যুর খবর স্বীকার করা হয়নি। পরে চিনের পক্ষ থেকে মৃত চার সেনা আধিকারিক ও সেনাকর্মীর নাম প্রকাশ করা হয়।
তার পর থেকে একাধিকবার সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা হয়েছে। চিনের সঙ্গে দফায় দফায় কর্পস কমান্ডার স্তরে বৈঠক করেছে ভারতীয় সেনা। কিন্তু তারপরেও দীর্ঘদিন সীমান্তে শক্তি বাড়িয়ে চলছিল চিন। ভারতও প্রস্তুত থাকছিল সীমান্তে। মোতায়েন করা হচ্ছিল বাড়তি সেনা। এরপর শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে উভয় দেশ। তবে সীমান্তের বেশ কয়েকটি জায়গাতে এখনও সেনা মোতায়ের রেখেছে দুই পক্ষই। যা দুই দেশএর মধ্যে বিশঅবাসের অভাবের প্রমাণ।